বাংলাদেশ সফর করা ভুটানের প্রতিনিধি দলে করোনার থাবা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ ভুটানে প্রথমবারের মতো এক সাংবাদিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংয়ের ঢাকা সফরের প্রতিনিধি দলের অংশ ছিলেন তিনি। ঢাকা থেকে নিজ দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় গত মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) তিনি করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংয়ের সফরসঙ্গী হিসেবে গত মাসে তিনি ঢাকায় এসছিলেন। পরে নিজ দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থা গত ৫ এপ্রিল রুটিন টেস্টে তিনি করোনা পজিটিভ হন। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে এই প্রথমবারের মতো ভুটানের কোনো সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হলেন।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে ভুটানের জাতীয় দৈনিক ‘কুয়েনসেল’ জানিয়েছে, ওই সাংবাদিকের পাশাপাশি ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী আরও এক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। লোটে শেরিংয়ের দফতরের ওই কর্মকর্তাও মঙ্গলবার করোনা টেস্টে পজিটিভ হন।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, করোনা পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরপরই তাদেরকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ সফরে করোনায় আক্রান্ত হওয়া অন্যদের সঙ্গে তাদেরকেও একইস্থানে রাখা হয়েছে। উভয়ের অবস্থাই বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে।
কয়েকটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ঢাকায় ভুটানের দূতাবাসের মধ্যে থাকা গেস্ট হাউসের এক রাধুনীও সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে আসা মিডিয়া টিম ওই গেস্ট হাউসে ছিলেন। ওই রাধুনী বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে কুয়েনসেল জানিয়েছে, ওই রাধুনীর মাধ্যমে অন্যরাও হয়তো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এছাড়া মার্চের ২৪ তারিখ বিদেশী কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের যোগদান অথবা ঢাকা বিমানবন্দরকে সম্ভাব্য সংক্রমণের স্থান হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ওই সূত্রটি বলছে, করোনা মহামারির জন্য নির্ধারিত প্রোটোকলের কারণে ভুটানের প্রতিনিধি দল ঢাকায় কোথাও বাইরে বের হননি। তাদের ভাষায়, ‘সেখানে (ঢাকায়) বাইরে বের হওয়াও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ বাংলাদেশে সংক্রমণের সংখ্যা অনেক বেশি।’
সফর শেষ করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো প্রতিনিধি দল মার্চের ২৫ তারিখে ঢাকা ত্যাগ করেন। এরপর মার্চের ৩১ তারিখে করা টেস্টে তাদের কেউই করোনা পজিটিভ হননি। প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ছাড়া সফরে থাকা বাকি সবাইকে রাজধানী থিম্পুর একটি স্থানেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল।
এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ভুটানের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব পারফর্মিং আর্টস’র (আরএপিএ) ১৫ জন শিল্পী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই অ্যাকাডেমির ২২ জন শিল্পী গত মাসে ঢাকায় এসেছিলেন।
সূত্র: কুয়েনসেল
টিএম