লেবাননের সীমান্তবর্তী শহর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল

লেবাননের সীমান্তে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সাথে টানা কয়েকদিনের সংঘর্ষের পর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় কিরিয়াত শমোনা শহর খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে সংঘর্ষের পর নিজেদের উত্তরাঞ্চলীয় শহর খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কিছুক্ষণ আগে সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ড শহরের মেয়রকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শহর খালি করার এই পরিকল্পনাটি পরিচালিত হবে।’
এএফপি বলছে, লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী এবং মিত্র ফিলিস্তিনি দলগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কয়েকদিন ধরে আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণ করে চলেছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ করা হয়।
এতে করে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে নতুন করে যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের বাহিনীও হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে হামলা করে চলেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুক্রবার ভোরে বলেছে, ‘আইডিএফ (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী)-এর পর্যবেক্ষণ পোস্টসহ বেশ কিছু সামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে কয়েকটি হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ‘এছাড়াও ইসরায়েলের দিকে ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার চেষ্টা করার সময় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান তিন যোদ্ধার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।’
এএফপি বলছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তার উত্তর সীমান্তজুড়ে বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহতভাবে করে চলেছে। এছাড়া রিজার্ভ সেনা এবং ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের বহরও এই অঞ্চলে জড়ো হতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন
মূলত হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি ভূখণ্ড ও সামরিক চৌকি লক্ষ্য করে প্রতিদিনই রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। এমনকি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সাথে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনাও ঘটেছে হিজবুল্লাহর। এতে এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর অন্তত ৮ সদস্য নিহত হয়েছেন।
ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি সীমান্ত চৌকি ও উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি এলাকায় হামলা বৃদ্ধি করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় কিরিয়াত শমোনা শহর খালি করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
টিএম