ঠান্ডা মাথায় দুই বোনকে খুনের ছক ভাইয়ের

দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর পর তার চাকরি কে পাবে— এখান থেকে বোনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু। তারপর এক সময় গিয়ে মনে হলো বোনেদের জন্য বেতনের একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। আবার বোনেরা পরে সম্পত্তির অংশ দাবি করতে পারেন এমন সন্দেহও ছিল।
সব মিলিয়ে দুই বোনকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বাইয়ের গণেশ।
গণেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বোনেদের হত্যা করে দোষ অন্য এক আত্মীয়ের ওপর চাপিয়ে দেওয়া। আর তদন্তের মোড় ঘোরানোর জন্য তিনি জানান যে, তাদের আত্মীয় পানীয় জলে বিষ মিশিয়েছেন; যা পান করার পরে তার দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি ওই আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মা এবং তদন্তকারী অফিসারদের মনে সন্দেহ জাগাতে সফলও হয়েছিলেন গণেশ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে— গত ১৫ অক্টোবর নবরাত্রির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সপরিবারে গিয়েছিলেন গণেশ। সেখানেই তিনি দুই বোনের জন্য ইনস্ট্যান্ট স্যুপ বানিয়েছিলেন। তার মধ্যেই মিশিয়েছিলেন ইঁদুর মারার বিষ। সেই স্যুপ খাওয়ার পরে বারান্দায় রাখা পাত্র থেকে পানীয় জল আনতে মা-কে পাঠান গণেশ। এরপর নবরাত্রি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে বোন সোনালি তাকে ফোন করে বলেন, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। এরপর গরবা থেকে বেরিয়ে গণেশ তাকে নিয়ে আলিবাগ সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই গত ১৭ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়। এরই মধ্যে আরেক বোন স্নেহার শরীরেও মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়। ২০ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়।
সোনালির মৃত্যুর পরেই এক আত্মীয়কে ফাঁসানোর চেষ্টা শুরু করেন গণেশ। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই আত্মী বারান্দায় রাখা পানির মধ্যে বিষ মিশিয়ে দিয়েছেন বলে তিনি সবাইকে বোঝাতে থাকেন।
কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে যে, বারান্দায় রাখা ওই পানিতে কেউ কিছু মেশাননি। এদিকে ওই পানি খেয়ে মায়েরও কোনো সমস্যা হয়নি। এই দু’টো বিষয়ে সন্দেহ গভীর হয়। পুলিশি জেরায় উঠে আসে গণেশ এবং তার বোনেদের বিবাদের কথা।
এরপরই মূলত সন্দেহের তীর ঘুরে যায় গণেশের দিকে। তার ফোন সার্চ করে গত ১১ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ৫৩টি অনুসন্ধান উঠে আসে। যেখানে দেখা যায়, বিষ সংক্রান্ত বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন গণেশ।
এনএফ