ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে ‘চরম বিভক্ত’ মুসলিম নেতারা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা বন্ধের দাবি নিয়ে শনিবার (১১ নভেম্বর) সৌদি আরবে জড়ো হয়েছেন মুসলিম দেশগুলোর নেতারা। তারা ‘আরব ও মুসলিম বিশ্বের সম্মেলনে’ যোগ দিতে রিয়াদে গেছেন।
সম্মেলনে মুসলিম নেতারা গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন। এরমধ্যে অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ইহুদিবাদী ইসরায়েলের ওপর তেল ও পণ্য নিষেধাজ্ঞার আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্য নেতারা শুধু নিন্দা জানিয়ে গেছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক বিশ্লেষণে জানিয়েছে, আজকের এ সম্মেলনের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে মুসলিম ও আরব নেতাদের মধ্যে থাকা ‘চরম বিভক্তির’ বিষয়টি পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শেষ হলে গাজার কি হবে এ ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা না করেই সম্মেলনে এসেছেন মুসলিম নেতারা। এছাড়া স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে ঐকমত্য দেখা যায়নি।
এমনকি, গাজায় ইসরায়েল বর্বরতা চালালেও সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি এখনো রয়ে গেছে। সৌদি এ পরিকল্পনা বাদ দেয়নি।
এছাড়া আরব বিশ্বের নেতারা একসঙ্গে ঘোষণা দেননি, ‘এটি হলো টার্নিং পয়েন্ট এবং আমাদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ যা অনেকেই এখন প্রত্যাশা করছেন।
আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, সৌদি আরবে উপস্থিত হওয়া মুসলিম নেতারা গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু এটি কার্যকরে তাদের আসলে কোনো সামর্থ নেই।
এর বদলে মুসলিম নেতাদের অপেক্ষা করতে হবে এই আশায়— যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধ ও মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে চাপ দেবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ এই যুদ্ধকে ‘ঘৃণ্য যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আলজেরিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে সব মুসলিম দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো কিছুই হবে না। কারণ অনেক দেশই এত দূর যেতে চায় না।
ফলে সম্মেলনটি— যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলের নিন্দা ও নতুন দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি
এমটিআই