কেন বদলে যাচ্ছে তাজমহলের শ্বেতশুভ্র রং?
![কেন বদলে যাচ্ছে তাজমহলের শ্বেতশুভ্র রং?](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2023December/tajmahal-20231205084844.jpg)
মুঘল সম্রাট শাহজাহান ও তার স্ত্রী মুমতাজের ভালোবাসার স্মৃতিচিহ্ন ভারতের আগ্রার তাজমহল। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম একটি এটি। স্মৃতিস্তম্ভটি দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ছুটে আসেন। শোনা যাচ্ছে, মুক্তার মতো সাদা সেই স্মৃতিস্তম্ভের রং নাকি ক্রমেই সবুজ হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বর্ষায় কিংবা গরমে পাথরের গায়ে এ ধরনের সংক্রমণ স্বাভাবিক হলেও শীতকালে এমন হওয়ার কথা নয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ জানিয়েছে, সাদা মার্বেল পাথরের রং বদলে যাওয়ার নেপথ্য রয়েছে ‘গোল্ডিকিরনোমাস’ নামক বিশেষ এক ধরনের পোকা।
এ ধরনের কীট সাধারণ ঝাঁক বেঁধে থাকতেই পছন্দ করে। তাজমহলের গায়ে রয়েছে তাদের রাজত্ব। সেই ‘গোল্ডিকিরনোমাস’ কীটের মুখ থেকে নির্গত লালা, মল জমতে জমতেই সাদা পাথরের রং ক্রমেই সবুজ হয়ে যাচ্ছে বলে মত ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের। ২০১৫ সালে প্রথম এই কীটের আবির্ভাব ঘটে। যমুনা নদীর দূষিত পানি থেকে এই পোকার জন্ম। মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, বছরে দুবার এই পোকাদের বংশবিস্তার করার সময়। তাই গরমেও যেমন এই পোকা বাড়তে থাকে, তেমনি শীত আসার আগেও সংখ্যায় বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন
পুরাতত্ত্ববিদ রাজকুমার প্যাটেলের তত্ত্বাবধানে এক দল গবেষক বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তদন্তে নেমে তারা দেখেছেন, ২০১৫ সাল থেকে একটু একটু করে সাদা মার্বেলের রং বদলে সবুজ হতে শুরু করেছিল। অনেকেই এর জন্য দূষণকে দায়ী করছিলেন। তা অনেকাংশেই ঠিক। তবে করোনা মহামারিতে দূষণের মাত্রা একটু হলেও কমেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ দাগে কোনো পরিবর্তন হয়নি। গতবারের তুলনায় চলতি বছর এই পোকা আবার দ্বিগুণ গতিতে বংশবিস্তার করেছে। ফলে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু অনেকের মত, ঠিক মতো ঠান্ডা পড়লে পোকাদের দাপট কিছুটা হলেও কমবে।
তাজমহলের গা থেকে সবুজ দাগ মুছতে তৎপর রয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। তাদের উদ্যোগে ইতোমধ্যেই ‘ডিসটিল্ড ওয়াটার’ দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে পুরো স্তম্ভটি। কিছুদিন পোকাদের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আবার সেগুলো ফিরে এসেছে।
এসএসএইচ