ভারতে সংবাদিকদের ফোনেও ইসরায়েলি স্পাই সফটওয়ার পেগাসাস

ভারতে সংবাদিকদের ফোনেও ইসরায়েলি স্পাই সফটওয়ার পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ‘টার্গেটেড ক্র্যাকডাউন অন ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন’ নামক রিপোর্টে এই অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই রিপর্টে বলা হয়েছে, ভারতে হাই প্রোফাইল সাংবাদিকদের ফোনে ইসরায়েলি স্পাই সফটওয়ার পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে। দ্য ওয়্য়ারের সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন, দ্য অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন প্রজেক্টের দক্ষিণ এশিয়ার সম্পাদক আনন্দ মঙ্গলের আই ফোনে ফরেনসিক তদন্ত করেছিল অ্যামেনস্টি।
অ্যামনেস্টির সিকিউরিটি ল্যাবের প্রধান ক্যারল বলেছেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি, ভারতে সাংবাদিকদের ওপর বেআইনি নজরদারি চলছে। তারা শুধু নিজের কাজ করছেন। তাদের ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে।’
অ্যামনেস্টি কী পেয়েছে?
২০২৩ সালের অক্টোবরে অ্য়াপল একাধিক আইফোন ব্যবহারকারীকে জানায়, তাদের ফোনে স্পাইওয়ার বসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যাদের কাছে এই বার্তা গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ২০ জন সাংবাদিক ও বিরোধী রাজনীতিক ছিলেন।
অ্যামনেস্টি এই খবরের ফলো আপ করে। তাদের সিকিউরিটি ল্যাব ফরেনসিক বিশ্লেষণ করে। তাদের এই বিশ্লেষণে ধরা পড়ে, মঙ্গলের ফোন চলতি বছরের ২৩ আগস্ট জিরো ক্লিক সংক্রামিত হয়েছে। এর ফলে কোনোরকম ক্লিক বা বোতাম টেপা ছাড়াই স্পাইওয়ার ইনস্টল হয়ে যায়।
তার ফোনে স্পাইওয়ার সফলভাবে বসান হয়েছিল কিনা, তা অ্যামনেস্টি বলতে পারেনি। তবে এই ঘটনাটা ঘটেছিল যখন মঙ্গলে ভারতের শেয়ার বাজারে কারচুপি করার চেষ্টা নিয়ে একটি খবর করছিলেন।
আর বরদারাজনের ফোন আক্রান্ত হয় চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর। ২০১৮ সালেও তার ফোনে মঙ্গলের মতো একইভাবে স্পাইওয়ার ঢোকানোর চেষ্টা হয়েছিল।
পেগাসাস সফটওয়ার ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপ তৈরি করেছে এবং বিশ্বজুড়ে তা সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়।
পেগাসাস ব্যবহারের সাম্প্রতিক অভিযোগ নিয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটন পোস্টকে জানানো হয়েছে, তারা নির্দিষ্ট কোনও ক্রেতা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করবে না। তবে তারা মূলত কোনও দেশের স্বীকৃত গোয়েন্দা বা আইন রক্ষাকারী সংস্থাকে এই সফটওয়ার দেয়। নিয়মানুযায়ী তারা একমাত্র সন্ত্রাসবাদ ও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে এই সফটওয়ার ব্যবহার করবে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ভারত অবশ্য পেগাসাস ব্যবহার করছে বলে কখনও ঘোষণা করেনি। ক্যারল জানিয়েছেন, ‘আমরা ভারত-সহ সব দেশের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেন এই স্পাইওয়ার আমদানি এবং ব্যবহার না করে।’
টিএম
