এক দশক পর মালি থেকে শান্তিরক্ষী মিশন গুটিয়ে নিলো জাতিসংঘ

দীর্ঘ এক দশকের মিশনের পর মালি থেকে শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার কাজ শেষ করেছে জাতিসংঘ। সংঘাতে বিধ্বস্ত দেশটি থেকে শান্তিরক্ষীদের শেষ দফায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে রোববার।
২০১৩ সালে আফ্রিকার এই দেশটিতে সশস্ত্র এক বিদ্রোহের পর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু মালির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার দেশটিতে নিয়োজিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন মিনুসমাকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের প্রধান বলেছেন, তারা দেশটিতে অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু তা প্রত্যাশার তুলনায় কম। লেবাননের পর বিশ্বে জাতিসংঘের দ্বিতীয় সবচেয়ে প্রাণঘাতী মিশন ছিল মিনুসমা। দেশটিতে গত এক দশকে প্রায় ৩১০ শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।
গত গ্রীষ্মে মালির পক্ষ থেকে জাতিসংঘকে দেশটি থেকে ১২ হাজার শান্তিরক্ষীকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মালি থেকে মিশন প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেয়। জাতিসংঘের কর্মীরা কয়েক মাস ধরে পর্যায়ক্রমে দেশটি ছাড়ছেন। শান্তিরক্ষীদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের জন্য ৩১ ডিসেম্বর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
শুক্রবার মালির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে নির্ধারিত সময়সীমার আগে উত্তর টিমবুক্টু অঞ্চলের শেষ প্রধান ঘাঁটিগুলোর একটির নিয়ন্ত্রণ মালির কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে মিনুসমা।
এতে বলা হয়েছে, মিশনের সমাপ্তি কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য ৩১ ডিসেম্বরের পরও কিছুদিনের জন্য দেশটির তিনটি এলাকায় জাতিসংঘের সীমিতসংখ্যক শান্তিরক্ষীর অবস্থান করার কথা ছিল। আর এই তিন এলাকার একটি ছিল টিমবুক্টু। কিন্তু সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর উদ্বেগজনক উপস্থিতির কারণে জাতিসংঘ সেই কার্যক্রমও গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতিসংঘের মিশন প্রধান এল-ঘাসিম ওয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আমাদের যা যা করার বাধ্যবাধকতা ছিল তার সঙ্গে আমরা যা করতে পেরেছি তাতে ব্যবধান আছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক কিছু করেছি, কিন্তু অবশ্যই তা প্রত্যাশার তুলনায় কম এবং প্রয়োজনীয়তার তুলনায় অপ্রতুল।’’ মালিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক নাজুক, সশস্ত্র ইসলামপন্থী এবং স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক আঞ্চলিক জোট (ইকোওয়াস) থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে মালিকে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করায় ইকোওয়াস মালির পাশাপাশি গিনি, নাইজার এবং বুরকিনা ফাসোরও সদস্যপদ স্থগিত করেছে। গত সেপ্টেম্বরে মালি, নাইজার এবং বুরকিনা ফাসো সাহেল অঞ্চলের জোট নামে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে।
সূত্র: বিবিসি।
এসএস