মার্কিন বাহিনীর প্রত্যাহার চায় ইরাক, পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের

ইরাক থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের কোনও পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও দেশ থেকে মার্কিন বাহিনীকে সরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরাক।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ইরাক অবস্থান করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২ হাজার ৫০০ সৈন্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা তারা করছে না বলে সোমবার জানিয়েছে পেন্টাগন। যদিও গত সপ্তাহে ইরাকের সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা দেশ থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
মার্কিন এয়ার ফোর্সের মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে, আমি কোনও ধরনের পরিকল্পনা (সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা) সম্পর্কে অবগত নই। আমরা আইএসআইএসকে পরাজিত করার মিশনে খুব মনোযোগ দিচ্ছি।’
মার্কিন বাহিনী ইরাকে দেশটির সরকারের আমন্ত্রণে অবস্থান করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাইডার বলেছেন, তিনি মার্কিন সৈন্য অপসারণের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিরক্ষা বিভাগে বাগদাদের কোনও বিজ্ঞপ্তির বিষয়েও অবগত নন। এছাড়া এই বিষয়ে কোনও কূটনৈতিক আলোচনা হয়েছে কিনা তা জানার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে সাংবাদিকদের যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয় গত শুক্রবার বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলার পর ইরাক থেকে মার্কিন বাহিনীকে সরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। মার্কিন সেই ড্রোন হামলার নিন্দাও করে তার সরকার।
পেন্টাগন জানিয়েছে, ওই ড্রোন হামলায় মার্কিন সেনাদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার জন্য দায়ী একজন মিলিশিয়া নেতা নিহত হয়েছেন।
সুদানির কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরাকে আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর উপস্থিতি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।’
বিবৃতিতে সুদানির উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বলা হয়েছে, ‘ইরাকে আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর অবস্থানের যৌক্তিকতা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা আমাদের দৃঢ় অবস্থানের ওপর জোর দিচ্ছি।’
বাগদাদে বিশিষ্ট এক ইরানি জেনারেলকে হত্যার চার বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন বাহিনী ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ওই ড্রোন হামলা চালায়। এটি দেশটির ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তারা সরকারকে ইরাক থেকে জোট বাহিনীকে বের করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ইরাকে আড়াই হাজার সেনা ছাড়াও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ৯০০ সৈন্য রয়েছে। ইসলামিক স্টেটের পুনরুত্থান ঠেকাতে স্থানীয় বাহিনীকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সহায়তার কাজও করে থাকে এসব সেনারা। ২০১৪ সালে পরাজিত হওয়ার আগে উভয় দেশের বেশ বড় অংশ দখল করে নিয়েছিল আইএস।
তবে গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাক এবং সিরিয়ায় কমপক্ষে ১০০ বার আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের ওপর সাধারণত রকেট এবং একমুখী আক্রমণকারী ড্রোনের মাধ্যমে হামলার চেষ্টা করে থাকে মিলিশিয়ারা।
টিএম