সৌদিতে ভারতীয় স্ত্রীকে ভয়াবহ নির্যাতন বাংলাদেশির

সৌদি আরবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী স্বামীর হাতে ভারতীয় এক নারী ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে সৌদির জেদ্দায় আটকা ওই নারী ও তার তিন সন্তানকে উদ্ধার করতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
ওই বাংলাদেশি প্রবাসী পেশায় গাড়িচালক। কয়েক বছর আগে তিনি ভারতের হায়দরাবাদের বাসিন্দা ওই নারীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে বর্তমানে তিন সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে সৌদিতে যাওয়া ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন ওই বাংলাদেশি। তাকেও ঘরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
সৌদিতে আটকা মেয়ে ও তার তিন সন্তানকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন ওই নারীর মা। বাংলাদেশি জামাইয়ের বিরুদ্ধে মেয়েকে নির্যাতন ও সৌদি আরবের একটি বাসায় আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন তিনি।
— Amjed Ullah Khan MBT (@amjedmbt) March 9, 2024
হায়দরাবাদের এমবিটি দলের নেতা আমজেদ উল্লাহ খান সরকারের কাছে সাবেরা বেগম নামের ওই নারীর দেওয়া একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার পর শনিবার (৯ মার্চ) ঘটনাটি জানাজানি হয়।
আরও পড়ুন
মেয়ের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে চিঠিতে সাবেরা বেগম বলেছেন, ‘‘আমি যৌতুক হিসেবে সোনার গহনা দিতে না পারায় বিয়ের এক মাস পর আমার মেয়ে সাবা বেগমকে তালাক দেন তার স্বামী। পরে আমার মেয়েকে বাংলাদেশি নাগরিক আলী হুসেন আজিজ উল রহমানের সাথে পুনরায় বিয়ে দিয়েছি। আলী হুসেন সৌদি আরবের মক্কায় গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত।’’
‘‘সাবার সাথে আলী হুসেনের বিয়ে সম্পন্ন হয় ২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর। ২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আমার মেয়ের সাথে ওমরাহ ভিসায় সৌদিতে যাই আমি। ওমরাহ পালনের পর আমার মেয়েকে তার কাছে রেখে আমি ভারতে ফিরে এসেছি। ওই সময় ওমরাহ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইকামার জন্য অর্থ দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আলী হুসেন।’’
— Amjed Ullah Khan MBT (@amjedmbt) March 9, 2024
বিয়ের পর থেকেই স্বামীর চরম দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের শিকার হন সাবা। তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং তার চলাচলের ব্যাপারে ব্যাপক কঠোর হয় আলী হুসেন। এমনকি পারিবারের সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এর মাঝেই তাদের সংসারে তিনটি সন্তানের জন্ম হয়েছে। তারা হলেন, ১১ বছর বয়সী আবদুল্লাহ, ৯ বছরের খাদিজা এবং ৪ বছর বয়সী আয়েশা।
সাবেরা বেগম বলেন, ‘‘সম্প্রতি সাবা জানতে পারেন তার স্বামী ১৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী সাদিয়া আক্তারকে বিয়ে করেছেন। আর এই কিশোরীকে আলী হুসেন বিশ হাজার রিয়ালে কিনেছেন।’’
সাবা এবং সাদিয়া— উভয়ই আলী হুসেনের কাছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। চিঠিতে সাবেরা বেগম বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে বাসার তালা খুলে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় যান। সাবা ও তার তিন সন্তান এবং সাদিয়া আক্তারও বর্তমানে জেদ্দার একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। দয়া করে আমার মেয়ে এবং তার তিন সন্তানকে উদ্ধার করুন।’’
শিগগিরই তাদের ভারতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ওই নারী।
সূত্র: দ্য সিয়াসাত ডেইলি।
এসএস