জলদস্যুতা-বিরোধী অভিযান, ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

ভারত মহাসাগর অঞ্চলে জলদস্যুতা-বিরোধী অভিযান পরিচালনায় ভারতীয় নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। সোমবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার সময় ভারতীয় নৌবাহিনীর এই প্রশংসা করেন তিনি। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
৪০ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে সোমালি জলদস্যুদের কাছ থেকে বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েনের নিয়ন্ত্রণ ভারতীয় নৌবাহিনী নেওয়ার দু’দিন পর দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রী টেলিফোনে কথা বলেছেন।
অভিযানের বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিস্তারিত তথ্য অনুযায়ী, আরব সাগরে জলদস্যুতা-বিরোধী মিশনের জন্য মোতায়েন করা ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা এমভি রুয়েনকে আটক করে। এই জাহাজটি গত বছরের ডিসেম্বরে সোমালি জলদস্যুরা ছিনতাই করে ভারত মহাসাগরে অন্যান্য জাহাজ ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করে আসছিল।
নজরদারি তথ্যের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি রুয়েনের গতিবিধি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। পরে সোমালিয়া থেকে প্রায় ২৬০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে অবস্থানরত জাহাজটিকে আটকানোর জন্য আইএনএস কলকাতাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে আইএনএস কলকাতা রুয়েনের পথ আটকে দেয় এবং ড্রোনের মাধ্যমে ওই জাহাজে সশস্ত্র জলদস্যুদের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়।
জলদস্যুরা গুলি চালিয়ে ড্রোনটি ধ্বংস করে এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজেও গুলি চালায়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, আইএনএস কলকাতা রুয়েনের স্টিয়ারিং ও পরিচালনা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করে। এভাবে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এমভি রুয়েনকে থামতে বাধ্য করে ভারতের নৌবাহিনীর সদস্যরা।
জলদস্যুদের জাহাজের কাছাকাছি অবস্থান বজায় রাখার সময় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনাও চালিয়ে যায় আইএনএস কলকাতা। যার ফলে জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করে এবং এমভি রুয়েন ও জাহাজে থাকা তার প্রধান ক্রুকে ছেড়ে দেয়।
ওই এলাকায় ভারতের আরেক যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুভদ্রার পাশাপাশি সি-১৭ বিমান মোতায়েন করা হয়। এর মাধ্যমে এমভি রুয়েনকে উদ্ধারে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করা হয়।
পরে জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে এমভি রুয়েনের ১৭ ক্রুকে অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় এবং ৩৫ সোমালি জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। জাহাজটিতে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদকদ্রব্য আছে কি-না, তা জানতে তল্লাশিও চালানো হয়।
এমভি রুয়েন প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ টন পণ্য পরিবহন করছে; যার মূল্য প্রায় এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জাহাজটি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত করায় এখন সেটি ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে।
এসএস