নিখোঁজ সাবমেরিন তিন টুকরো, সবার প্রাণহানি

কয়েকদিন আগে বালি দ্বীপের উপকূল থেকে সমুদ্রে মহড়ায় যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নৌবাহিনীর সাবমেরিনটিকে তিনটি খণ্ডে টুকরো অবস্থায় সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ায় সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। খবর বিবিসি অনলাইনের।
দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা রোববার জানিয়েছেন, ডুবোজাহাজটিতে যে ৫৩ জন ক্রু ছিলেন তাদের সবাই নিশ্চিতভাবে মারা গেছেন। সাবমেরিনটির কাছ থেকে তারা বার্তা পেয়েছেন এবং এটি সমুদ্রের আটশো মিটার গভীরে ডুবে গেছে বলে জানা যাচ্ছে।
সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে ধার নেওয়া একটি উদ্ধারকারী যানের সাহায্যে ছবি তুলে তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। সাবমেরিনটি মহড়া চালানোর সময় গত বুধবার নিখোঁজ হয়ে যায়। গতকাল শনিবার এর ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছিল ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী।
রোববার সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, জাহাজের কিছু ভগ্নাবশেষ ও জায়নামাজের মতো কিছু জিনিস উদ্ধার করার পর তারা নিশ্চিত হন যে জাহাজটি ডুবে গেছে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
স্ক্যান থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সাবমেরিনটি সমুদ্রের সাড়ে আটশ মিটার গভীরে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে, সচল অবস্থায় এত গভীরে যাওয়ার সক্ষমতা এই সাবমেরিনের নেই। জার্মানিতে তৈরি সাবমেরিনটি স্বাভাবিকভাবে সর্বোচ্চ ৫৫০ মিটার নিচে যেতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর প্রধান ইওদো মারগোনো রোববার জানিয়েছেন, জাহাজ থেকে ভেসে আসা আরও কিছু জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সাবমেরিনের নোঙর এবং ক্রুদের নিরাপত্তা স্যুট।
তিনি বলেছেন, ‘কেআরআই নানগালা ভেঙে তিন টুকরো হয়ে গেছে। জাহাজের খোল, জাহাজের পেছনের অংশ এবং জাহাজের মূল অংশ— সব আলাদা হয়ে গেছে। ডুবোজাহাজটির প্রধান প্রধান অংশগুলোও ভেঙে গেছে।’
এর আগে কর্মকর্তারা বলেছিলেন, জাহাজটি যখন নিখোঁজ হয়ে যায় তখন তাতে তিন দিনের অক্সিজেন মজুদ ছিল। এর আগে শনিবার নৌবাহিনীর প্রধান ইওদো মারগোনো বলেছেন, যেখান থেকে সাবমেরিনটি নিখোঁজ হয়েছে তার কাছেই এর কিছু অংশ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেছেন, স্ক্যান করে দেখা গেছে যে, ডুবোজাহাজটি সমুদ্রের যতটা গভীরে চলাচল করতে পারে, এটি তার চেয়েও অনেক গভীরে তলিয়ে গেছে এবং এ কারণেই তারা সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার কথা ঘোষণা করছেন।
বালি দ্বীপের কাছে সমুদ্রে মহড়ার সময় সাবমেরিনটির সঙ্গে বুধবার সকালে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় এটি ডুব দেওয়ার জন্য অনুমতি চাইছিল। জার্মানির তৈরি ডুবোজাহাজটি ৪০ বছরের পুরনো। তবে ২০১২ সালে এতে কিছু সংস্কার করা হয়।
এএস