বারানসি, অযোধ্যা, মথুরায় ধরাশায়ী বিজেপি

বারানসি, অযোধ্যা, মথুরা, কানপুরসহ উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিপর্যয় হয়েছে। উল্লিখিত এসব এলাকাগুলো কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পঞ্চায়েত ভোটে এসব এলাকায় খুবই কম আসন পেয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের কেন্দ্র বারানসি। সেখানে আটটি বিজেপি আর সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ১৫টি। বিএসপি পাঁচটি এবং আপ এবং সুহেলদেব ভারতীয় জনতা পার্টি একটি করে আসন।
যে অযোধ্যাকে কেন্দ্র করে বিজেপি রাষ্ট্রক্ষমতায় সেখানে দলটির অবস্থা তো আরও খারাপ। অযোধ্যায় বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৬ আসন, সমাজবাদী ২২টি, বিএসপি চারটি আসন। যেখানে বাবরি মসজিদের স্থলে রামমন্দির হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যে জায়গাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেন, সেখানেও বিজেপি ধরাশায়ী হয়েছে।
মথুরায় বিএসপি ১২, অজিত সিংয়ের লোকদল নয়টি এবং বিজেপি তিনটি আসনে জিতেছে। অর্থাৎ, উত্তরপ্রদেশের প্রধান তিনটি ধর্মীয় শহরে বিজেপির শোচনীয় হার হয়েছে। তবে শুধু এখানেই নয়, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছবিটা কমবেশি একই।
মিরাটে বিজপি ৬, সমাজবাদী পার্টি ৯ ও বিএসপি ১২টি আসনে জিতেছে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, যেখানে কৃষকদের আন্দোলন জোরদার ছিল, সেখানে বিজেপি অধিকাংশ আসনে হেরেছে। এবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ উত্তরপ্রদেশে বেশ কিছু আসনে জিতেছে।
অমর উজালার রাজনৈতিক সম্পাদক শরদ গুপ্তা ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘এবারের ভোটে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে করোনা ও কৃষক আন্দোলনের। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ প্রবল হয়েছে। লোকের মনে হয়েছে, সরকার কিছুই করেনি। সেই সঙ্গে কৃষকদের আন্দোলনের বিপুল প্রভাব পড়েছে। তারই যোগফলে বিজেপি খারাপ ফল করেছে।’
আগামী এক বছরের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই হার যোগীর পক্ষে কতটা বিপদসঙ্কেত? যোগীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কি মানুষ ক্ষুব্ধ? মানুষ কি কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে? এমন প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তরপ্রদেশের প্রবীণ সাংবাদিক সতীশ কে সিং মনে করেন, ‘এ নির্বাচন ছিল সেমিফাইনাল। যোগীর মধ্যে স্বৈরাচারী ও পুলিশি ব্যবস্থা চালু করার প্রবণতা স্পষ্ট। কেউ সামাজিক মাধ্যমে অক্সিজেন বা বেড চেয়ে লিখছেন, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাচ্ছে। মানুষ এটা মানতে পারছেন না। করোনাকালে এই ভোট হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে।’
তার মতে, ‘সরকার জোর করে সব কাজ করতে চাইছে। তার প্রভাব ভবিষ্যতেও পড়তে পারে।’
এএস