করোনা: ভারতে দৈনিক আক্রান্তের চেয়ে সুস্থতার হার বেশি

টানা দুইমাস ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর ধীরে ধীরে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ভারতে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত রোগীর তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি ছিল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ভারতের বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শনিবার ভারতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ১৭০ জন। অন্যদিকে, একই দিন দেশটিতে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৩৭ জন।
— ANI (@ANI) May 16, 2021
আগের দিন শুক্রবারের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা অবশ্য কিছুটা বেড়েছে ভারতে। শনিবার দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ৪ হাজার ৭৭ জন করোনা রোগী। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৭৯ জন।
গত কয়েকদিন ধরেই ভারতে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ রেখচিত্রের নিম্নমূখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বুধবার দেশটিতে গত দেড় মাসে প্রথমবারের মতো দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখের নিচে নেমে আসে।
ওইদিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭২০ জন। তার পরের দিন বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর তালিকায় নাম লেখান ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১২২ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত ভারতের দুই রাজ্য দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের পুরো মাস ধরে যেখানে দিল্লিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারেরও বেশি, সেখানে শনিবার দিল্লিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৫০০ জন।
দিল্লির রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ১০ এপ্রিলের পর শুক্রবার (১৫ মে) প্রথমবারের মতো দিল্লিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের কম ছিল। সেদিন সেখানে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন ৮ হাজার ৫০৬ জন।
পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রেও। শনিবার সেখানে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৯৮ জন।
প্রায় পুরো এপ্রিল ও মের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজারের ওপরে ছিল। শুক্রবার প্রথম সেখানে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা কম দেখা যায়। ওই দিন মহারাষ্ট্রে করেনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজারের কম।
ভারতে সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরালায়। তার পর বছর জুড়ে চলতে থাকে এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
গত বছর নভেম্বরের দিকে অবশ্য কমতে শুরু করেছিল ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। ফেব্রুয়ারি মাসে এই হার ছিল সর্বনিম্ন। সে সময় গড়ে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজারেররও কম।
কিন্তু মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বাড়তে শুরু করে সংক্রমণের হার। এপ্রিলে তা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে যত সংখ্যক সক্রিয় করোনা রোগী আছেন, তার প্রায় ৫০ শতাংশই ভারতে।
এসএমডব্লিউ