ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন ট্রাম্প: কমলা হ্যারিস

নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্পের হুমকির বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবির। ট্রাম্পের সমালোচনা করে ডেমোক্র্যাট নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার আগেও করেছেন ট্রাম্প, এখনও করে চলেছেন। গণতন্ত্রের অবমাননা করেছেন তিনি।
রোববার (৩ জানুয়ারি) জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে এক সমাবেশে একথা বলেন হ্যারিস। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) জর্জিয়ায় সিনেট নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জন অসোফ ও রাফায়েল ওয়্যারনকের প্রচারকাজে অংশ নেন তিনি।
ভোট জোগাড় করে দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের আবদার ও পরে হুমকির প্রসঙ্গ তুলে কমলা হ্যারিস আরও বলেন, হতাশা থেকেই এসব কথা বলছেন ট্রাম্প। নিশ্চিতভাবেই এসব হতাশা থেকেই আসছে।
এদিকে কমলা হ্যারিসের মতো অন্য শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতারাও দ্রুততার সঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ট্রানজিশন টিমের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বব বাউয়ের বলেন, নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে দিতে ট্রাম্প যে একজন কর্মকর্তাকে হুমকি ও চাপ দিচ্ছেন, এই ফোনালাপ তার অকাট্য প্রমাণ। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আইনগত ভাবে বৈধ ও স্বীকৃত ভোট গণনাকে বদলাতে চাইছেন ট্রাম্প।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকান গণতন্ত্রের ওপর ট্রাম্প কিভাবে আক্রমণ করছেন তা আমরা এই কথোপকথনে দেখতে পাচ্ছি।
ভোটের হিসেব পাল্টে দেওয়ার আবদার ও হুমকি দিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তার সঙ্গে ট্রাম্পের এই গোপন কথোপকথন প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। তারপর যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোতেও সেই ফোনকলের রেকর্ডিংটি ছড়িয়ে পড়ে।
ফাঁস হওয়া ফোনকলে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি ব্র্যাড র্যাফেন স্পার্জারকে নিজের (ট্রাম্পের) জন্য প্রায় ১২ হাজার ভোট জোগাড় করে দিতে বলেন ট্রাম্প। তা না হলে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে ব্র্যাডকে হুমকিও দেন তিনি। তবে রিপাবলিকান সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্পের ওই আবদার মেনে ভোটগণনায় হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি ব্র্যাড।
ফাঁস হওয়া ফোনকলের ব্যপ্তি চার মিনিট ২০ সেকেন্ড। তাতে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়,‘জর্জিয়ার মানুষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে গোটা দেশ। আপনিই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। ভোট পুনর্গণনা হয়েছে বলতেই পারেন আপনি। তাতে কোনও দোষ নেই। আমার কেবল ১১ হাজার ৭৮০ ভোটের প্রয়োজন। জর্জিয়া আমরাই জিতেছি। এ বার বলুন ব্র্যাড, আপনি কি করবেন? নির্বাচনে আমরাই জিতেছি। এ ভাবে আমাদের হাত থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়া উচিত নয়। (এটা না করলে) এর চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।’
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল ভোট তো বটেই, পপুলার ভোটেও (জনগণের সরাসরি ভোট) ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন বাইডেন। কিন্তু শুরু থেকেই বাইডেনের জয় মানতে নারাজ ট্রাম্প। বরং ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে একের পর এক অভিযোগ করেই যাচ্ছেন তিনি।
এমনকি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতে গেলেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে ট্রাম্পকে। আর এবার গোপন কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিং ঘিরে বিদায়ের আগে নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন তিনি।
টিএম