করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ মোদির সাফল্যের তালিকায় রামমন্দির!

আগামী ২৬ মে ভারতের মোদি সরকারের সপ্তম বর্ষপূর্তি। এমন সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে করোনা মোকাবিলায় গুরুতর ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে দেশটিতে। ব্যর্থতার এই অভিযোগের সময়ে মোদি সরকার তার সপ্তম বর্ষপূর্তিতে সাফল্যের তালিকায় রেখেছে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ। কারণ, ‘৪৯২ বছরের প্রতীক্ষার শেষে’ গত বছর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থের টানাটানির অজুহাতে মোদি সরকার সবার জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করতে নারাজ। কিন্তু নতুন সংসদ ভবন ও সেন্ট্রাল ভিস্টার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। ক্ষমতায় সাত বছর পূর্ণ করার পথে মোদি সরকারের বক্তব্য, এ হলো ‘আত্মনির্ভর ভারতের আয়না’।
প্রতিদিনই ভারতে টিকাদানের হার কমছে। কংগ্রেসসহ বিরোধীরা বৃহস্পতিবারও অভিযোগ তুলেছেন, দেশে টিকার অভাব। হাসপাতালের বেড থেকে শ্মশান- কোনোখানে জায়গা নেই। অন্যদিকে ভারতের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রণালয় নতুন সংসদ ভবনের ছবি তুলে ধরে বলছে, সেখানে দেড়শ শতাংশ বেশি বসার জায়গা হবে।
আর কোভিডের মোকাবিলা? মন্ত্রণালয়ের পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদকীয়তে দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে ফের কোভিড মোকাবিলার পুরো দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিতে হয়েছে। গত ২৮ দিনে তিনি ১৭টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত প্রয়োজন মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্য সময় হলে সরকারের ৭ম বর্ষপূর্তিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে সাফল্যের প্রচার হতো। কিন্তু অতিমারির সময়ে হাত-পা বাঁধা। তাই নমো নমো করেই মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের সাত বছরের সাফল্য প্রচার শুরু হয়েছে। সেই উপলক্ষে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পাক্ষিক পত্রিকা ‘নতুন ভারতের উত্থান’কে থিম করেছে। মোদি সরকারের সাত বছরকে বর্ণনা করা হয়েছে ‘নতুন ভারতের নির্মাণ পর্ব’ হিসেবে।
এদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এ হলো বাস্তবকে অস্বীকার করতে বালিতে মুখ গুঁজে থাকা। সব থেকে বড় অজ্ঞতা জ্ঞানের অভাব নয়। তা হলো জ্ঞান অর্জনকেই অস্বীকার করা।’ কেন্দ্রকে নিশানা করে রাহুলের বক্তব্য, ‘গঙ্গার তীরের বালিতে মৃতদেহ দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্যই বলছে, ওই বালিতেই মোদি প্রশাসন মাথা গুঁজে রেখেছে।’
তবে মোদি সরকারের মন্ত্রীরা এই অভিযোগে কান দিতে নারাজ। ওই পত্রিকাতেই স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে তুলে ধরা হয়েছে। সরকারের যুক্তি, ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহকে শুধুমাত্র বিদ্রোহ বলার ভুল শুধরে তিনিই একে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলেছিলেন। সাভারকরকে স্বাধীনতা সংগ্রামীর আসনে বসানো নিয়ে অবশ্য বরাবরই প্রশ্ন উঠেছে।
এইচকে