মৃত্যুর দুঃখজনক মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল ভারত

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে ভারত। সোমবার এই ভাইরাসে ৩ লাখ মৃত্যুর দুঃখজনক এক মাইলফলকে পৌঁছেছে দেশটি। এশিয়ার এই দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছে; যা যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের পর বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে করোনার দৈনিক সংক্রমণ দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ চার লাখ পর্যন্ত পৌঁছায় এবং মারা যান হাজার হাজার মানুষ। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখনও প্রত্যেকদিন দেশটির শ্মশান ও কবরস্থানে দীর্ঘ লাশের সারি দেখা যাচ্ছে। শ্মশানের কর্মীরা দিনরাত অবিরাম সৎকার করে চলছেন করোনায় মৃতদের। একই দৃশ্য মুসলিমদের কবরস্থানগুলোতেও।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ২ লাখ ৪০ হাজার ৮৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সোমবার দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার ১৩২ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে মারা গেছেন ৩ হাজার ৭৪১ জন; এ নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে ভারতে মোট মৃত্যু ৩ লাখ ৩ হাজার ৩৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এই মুহূর্তে করোনায় মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের পরই তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। বিশ্বে সর্বাধিক ৬ লাখ ৩ হাজার ৮৯৬ জনের মৃত্যু নিয়ে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এই ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ২৯১ জনের।
দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশজুড়ে করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র অস্পষ্ট। কারণ অনেকেই হাসপাতালের বাইরে বাসা-বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন। তারা করোনায় মৃত্যুর সরকারি হিসেবের বাইরে থেকে যাচ্ছেন। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও নেই। করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ প্রাণঘাতী হয়ে উঠলেও কিছু কিছু এলাকায় পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা একেবারে অপ্রতুল।
ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর বিশ্বে এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ৩৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৮২ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশ
ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পেছনে দেশটিতে দু’বার রূপ বদলে ফেলা এই ভাইরাসের একটি প্রাণঘাতী ধরন এবং জনগণের করোনাবিধি মেনে না চলাকে দায়ী করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসএস