‘সৌদিতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হবে আমার’

ইউক্রেনে যুদ্ধ-বিরতি ইস্যুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকের স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে সৌদি আরবকে। বুধবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক তথ্য জানিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতোমধ্যে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন এবং এই সংখ্যা যেন আর না বাড়ে— সে ব্যাপারে আমি এবং পুতিন, আমরা উভয়ই একমত। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই, একে অপরের দেশে সফরও করতে চাই। আমি আশা করি তিনি আমাদের এখানে আসবেন এবং আমিও সেখানে সফরে যাব।”
“এবং শিগগিরই সাক্ষাৎ করছি আমরা। সম্ভবত সৌদি আরবেই ঘটতে যাচ্ছে এটি।”
ট্রুথ সোশ্যালে এই বিবৃতি দেওয়ার আগে অবশ্য টেলিফোনে পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানিয়েছে, বুধবার টেলিফোনে পুতিনের সঙ্গে পায় দেড় ঘণ্টা কথা বলেছেন তিনি।
পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর জেলেনস্কিকেও ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে সে তথ্য জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “আমি জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছি এবং পুতিনের মতো তিনিও শান্তি চান।”
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
মিনস্ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের তদবিরের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনকে দফায় দফায় সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে থাকে ওয়াশিংটন এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা। পশ্চিমা সহায়তাপুষ্ট ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও কোনোমতে টিকে থাকতে পারলেও বিপুল পরিমাণে লোকবল হারিয়েছে গত ৩ বছরের যুদ্ধে। পাশাপাশি, এই সময়সীমায় দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— ইউক্রেনের এই চার প্রদেশকে নিজেদের মানচিত্রভুক্ত করেছে রাশিয়া।
গত বছর মস্কো প্রস্তাব দিয়েছিল, ইউক্রেন যদি ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবির বন্ধের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে, তাহলে কিয়েভের সঙ্গে শান্তি সংলাপে বসতে প্রস্তুত আছে মস্কো।
জবাবে জেলেনস্কি বলেছিলেন, যে কোনো শান্তি সংলাপের আগে ক্রিমিয়া ও চার প্রদেশ ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
দু’পক্ষের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত আর শান্তি সংলাপ হয়নি। তবে নভেম্বরের নির্বাচনের আগে বিভিন্ন প্রচারাভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ক্ষমতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারটিকে অগ্রাধিকার দেবেন তিনি।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ