পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপের আগে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা রাশিয়ার

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপের আগে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এমনটাই জানিয়েছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম এতো বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। রোববার (১৮ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত চালানো এই ড্রোন হামলায় কিয়েভসহ একাধিক অঞ্চল লক্ষ্যবস্তু হয় বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। রাজধানী অঞ্চলের ওবুখিভ জেলায় এক নারী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত আরও তিনজন, যার মধ্যে একজন চার বছরের শিশু।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রোববার সকাল ৮টা (স্থানীয় সময়) পর্যন্ত রাশিয়া ২৭৩টি ড্রোন ছুড়েছে। এর মধ্যে ৮৮টি ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে এবং ১২৮টি নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুর বাইরে গিয়ে পড়ায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি।
এদিকে এই হামলার সময়টিও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এর ঠিক একদিন পরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্প বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন এবং রাশিয়া তা না মানলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যুদ্ধবন্দি বিনিময় বিষয়ে একটি চুক্তি হলেও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আন্দ্রেই ইয়ারমাক বলেন, “ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার আলোচনায় বসা আসলে এক ধরনের ছলনা। পুতিন যুদ্ধই চান।”
এদিকে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা আশঙ্কা করছে, রাশিয়া হয়তো রাতের মধ্যে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ করতে পারে, যার লক্ষ্য হতে পারে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা। রাশিয়া অবশ্য এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি।
আরও পড়ুন
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শনিবার রাতে ও রোববার সকালে ইউক্রেনের ছোঁড়া ২৫টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
অন্যদিকে জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ জানিয়েছেন, পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপের আগে তিনি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের নেতারা এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসবেন ট্রাম্পের সঙ্গে। সম্প্রতি এই চার দেশের নেতারাই ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধবিরতির পক্ষে আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে বন্ধ করতে রাজি। কিন্তু রাশিয়া বলছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে কেবল তখনই, যদি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা হয়।
পুতিন আরও দাবি করেছেন, যুদ্ধ বন্ধে যেকোনও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে যুদ্ধ শুরুর ‘মূল কারণ’ নিয়ে আলোচনা। রাশিয়ার শর্তের মধ্যে রয়েছে— ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা, সেনাবাহিনী হ্রাস এবং ন্যাটো সদস্যপদে না যাওয়া। এই সব দাবিকে ইউক্রেন আত্মসমর্পণের শর্ত হিসেবে দেখছে এবং সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
টিএম