বংশের মধ্যেই বিয়ে, লাঙলে বেঁধে গ্রামে ঘোরানো হলো স্বামী-স্ত্রীকে

ভারতে এক আদিবাসী দম্পতিকে জোয়াল বেঁধে লাঙ্গল টানাতে বাধ্য করা হয়েছে। মূলত একই বংশে বা একই গোত্রে বিয়ে করার “অপরাধে” গ্রামের পঞ্চায়েতের নির্দেশে জনসমক্ষে তাদেরকে এই অপমান ও শাস্তি দেওয়া হয়।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের কোরাপুট জেলায়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রোববার ঘটে যাওয়া এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে এবং এটি ভারতজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ঘটনার দিন এক আদিবাসী ছেলে ও মেয়ে নিজেদের পছন্দে পালিয়ে গিয়ে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
— NDTV (@ndtv) July 14, 2025
পরে জানা যায়, তারা দুজনই একই গোত্রের, যা ওই অঞ্চলের আদিবাসী রীতিতে “নিষিদ্ধ” হিসেবে বিবেচিত। এই অভিযোগে গ্রামে এক অনানুষ্ঠানিক পঞ্চায়েত বসে। পঞ্চায়েতের নির্দেশে, ওই দম্পতিকে জুতার মালা পরানো হয় এবং পুরো গ্রামে ঘোরানো হয়।
এরপর তাদের জোয়ালে বেঁধে গরুর মতো লাঙ্গল টানাতে বাধ্য করা হয়। ঘটনাটি চলাকালীন তাদের গায়ে হাত তোলার ঘটনাও ঘটে।
ভারতে অবশ্য এটিই এমন প্রথম ঘটনা নয়। সম্প্রতি পাশের রায়গাড়া জেলাতেও ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক যুবক নিজের ফুফাতো বোনকে বিয়ে করায় দুজনকেই একইভাবে জোয়ালে বেঁধে লাঙ্গল টানানো হয় এবং লাঠিপেটা করা হয়।
এদিকে ঘটনাগুলোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, অনেকেই এই ধরনের বর্বর ও অবমাননাকর “শুদ্ধিকরণ প্রথা”র নিন্দা জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কারও ব্যক্তিগত পছন্দের বিয়ে করা অপরাধ নয়।
আরও পড়ুন
এছাড়া গোত্রভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তি প্রথা একুশ শতকে অমানবিক ও আইনবিরুদ্ধ।
অন্যদিকে এই ঘটনাগুলো সামনে আসার পর স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও বড়সড় গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।
টিএম