বিধায়ক বলছেন, বেতনের এত টাকা কী করব?

Dhaka Post Desk

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৩ জুন ২০২১, ০৭:৪৮ পিএম


বিধায়ক বলছেন, বেতনের এত টাকা কী করব?

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে বিধায়ক হন চন্দনা বাউড়ি। তিনি হলফনামায় জানিয়েছিলেন, তার মোট সম্পত্তির মূল্যমান মাত্র ৩২ হাজার রুপি। কিন্তু বিধায়ক হয়ে মাসিক ৮২ হাজার টাকা ভাতা পাবেন শোনার পর চন্দনা বলছেন, ‘বেতনের এত টাকা কী করব?’

আনন্দবাজার পত্রিকার রোববারের এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজমিস্ত্রি স্বামীর সঙ্গে জোগালির কাজ করা চন্দনার দৈনিক মজুরি ছিল আড়াইশ রুপির মতো, সরকারি প্রকল্পেও জোগালির কাজ করেছেন তিনি। আর তার স্বামীর দৈনিক মজুরি ৪০০ রুপি।

নুন আনতে পান্তা ফুরায় ধরনের একটি পরিবারের গৃহকর্ত্রী চন্দনা বেতন ও ভাতা মিলিয়ে ৮২ হাজার রুপি পাবেন। টাকার অঙ্কটা আরও বাড়তেও পারে। তবে দিনমজুর পরিবার থেকে উঠে আসা বিধায়ক চন্দনা এমনটা শোনার পর বলে ওঠেন, ‘অত্ত টাকা মাইনে পাব?’

সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘কী করব এখনো ভাবতে পারছি না। মানুষের জন্য ভালো হয় এমন কিছু করব প্রথম মাইনের (বেতন-ভাতার) টাকায়। তারপরও মাইনের টাকা মানুষের কাজেই লাগাব। তাছাড়া অত টাকা তো আমাদের লাগবেও না।’

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার যে এলাকায় চন্দনাদের বাস সেই গঙ্গাজলঘাটি এলাকার গ্রাম কেলাইয়ের সব মানুষ দরিদ্র পরিবারের লোক। নিকটবর্তী শহর বাঁকুড়া ৩২ কিলোমিটার দূরে। নরেন্দ্র মোদির ‘স্বচ্ছ কর্মসূচি’র মাধ্যমে তিনি বিজেপির কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন।

চন্দনা বলেন, ‘কোনোদিন এমএলএ হব তা তো ভাবিইনি। মোদিজির ‘স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিতে প্রথম বিজেপি অফিসে গিয়েছিলাম। তারপর থেকেই পার্টির হয়ে কাজ করছি। আমায় প্রার্থী করা হবে ভাবিইনি। সবাই চেষ্টা করেছে বলে আমি জিতে গেছি।’

Chandna

বিধায়কদের বেতন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হলেও চন্দনার অ্যাকাউন্ট নেই। ভোটে জেতার পর শপথ নিতে কলকাতায় বিধানসভায় গিয়েছিলেন। সেখানেই জেনেছিলেন রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে, সেখানেই জমা হবে বেতনের টাকা।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় লকডাউন জারি হয়, ফলে কলকাতায় আর যাওয়া হয়নি তার, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। এখন পর্যন্ত বিধায়ক হিসেবে প্রাপ্য বেতনও পাননি। 

গাড়ি কিংবা টেলিভিশন কিনবেন কি না- এমন প্রশ্নে চন্দনা জানান, গাড়ির দাম অনেক, তার স্বামীর মোটরসাইকেল আছে, সেটিতে চড়েই যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানান। আর টেলিভিশন প্রসঙ্গে চন্দনা বলেন, তার নিজের মোবাইলেই টেলিভিশন দেখা যায়।

চন্দনার নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক চার জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান নিযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের একজন কর্মীও আছেন। নিজের বাড়ির কাছে একটি নির্মানাধীন বাড়িতে তাদের রেখেছেন তিনি। কিন্তু সেই বাড়ির দরজা-জানালা ছিল না। চন্দনার রাজমিস্ত্রি স্বামী নিজেই সিমেন্ট, বালু দিয়ে জোয়ানদের ঘরে একটি দরজা ও দুটি জানালা লাগিয়ে দিয়েছেন। চন্দনাও তো প্রথম কয়েকদিন তার শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে হাত লাগিয়ে রেঁধে খাইয়েছেন জওয়ানদের। এখন অবশ্য তারা নিজেরাই নিজেদেরটুকু রেঁধে নেন।

এএস/জেএস

Link copied