মীর জাফরের আরেক উত্তসূরির মৃত্যু

পাকিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জার শেষ জীবিত পুত্র হুমায়ুন মির্জা রোববার ৯৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন। অনেকেই হয়তো জানেন না স্বৈরশাসক মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা ছিলেন বাঙ্গালি ও মীর জাফরের গ্রেট গ্রান্ড সন।
গত রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের বেথেসডায় নিজ বাসভবনে ইস্কান্দারপুত্র হুমায়ুন মির্জার মৃত্যু হয় বলে পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন গতকাল সোমবারে তাদের এক অনলাইন প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে।
১৯২৮ সালে ভারতের পুনেতে জন্ম নেওয়া হুমায়ুন মির্জা পাকিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা ও তার প্রথম স্ত্রী রিফাত বেগমের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড গ্রাজুয়েট হুমায়ুন মির্জা ছিলেন বিশ্বব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তা। ১৯৮৮ সালে অবসরে যান তিনি।
ভারতের দুন স্কুলে পড়ার পর ব্রিটেন তারপর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এমবিএ ডিগ্রি নেওয়া হুমায়ুন মির্জা ‘ফ্রম পলাশি টু পাকিস্তান: দ্য ফ্যামিলি হিস্টরি অব ইসকান্দার মির্জা’ এবং ‘সান অব আ প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড এ্যায়া টু আ থ্রোন’ নামে দুটি বই লিখেছেন।
তার পিতা ইস্কান্দার মির্জা ও মীর জাফর আলী খানের বংশ নিয়ে লেখা ওই ঢাউশ বইয়ে পাকিস্তানেরও অনেক অজানা ইতিহাস, সামরিক শাসন জারি ও ইস্কান্দার মির্জাকে জোর করে দেশত্যাগে বাধ্যকরাসহ নানা প্রসঙ্গ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
হুমায়ুন মির্জার দাদা ফাতেহ আলি মির্জা মুর্শিদাবাদের নবাব পরিবারের লোক ছিলেন। এই পরিবার বাংলা, বিহার, ওডিশার নবাব মীর জাফর আলী খানের (মীরজাফর) উত্তরাধিকারী। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সঙ্গে মীর জাফর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
কখনো পাকিস্তানে বসবাস করেননি হুমায়ুন মির্জা। তবে বিশ্বব্যাংকে চাকরি করার সময় প্রথম পাকিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিলডার্থের মেয়েকে বিয়ে করেন। তবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে ব্রাজিলীয় মারিল্লা মানদেল্লিকে বিয়ে করেছিলেন।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে ছিল তার অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব। হুমায়ুন মির্জা তার বইয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর কথাও উল্লেখ করেছেন। ভুট্টো বেশ বাগ্মী ও বুদ্ধিমান ছিলেন বলেও নিজের আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহের শুরুতে ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডকে ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ বলে বর্ণনা করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হককে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা থেকে বিরত রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এএস