২৪ হাজার বছর পর ঘুম ভাঙল যে প্রাণীর

রূপকথায় প্রাণীদের বহু বছর পর ঘুম ভাঙানোর কাহিনি সম্পর্কে সবাই কম-বেশি পরিচিত। বাস্তবেও কিছু কিছু প্রাণীর মধ্যে এই ঘটনা দেখা গেলেও এখনও স্তন্যপায়ীদের মধ্যে এ রকম কোনও প্রমাণ মেলেনি।
এক ধরনের কচ্ছপ ৩-৪ বছর ঘুমিয়ে কাটায়। শীতকালে সাপ-ব্যাঙের ঘুমের কথা সবারই জানা। তেমন কিছু মাছও না খেয়ে ঘুমিয়ে কাটাতে পারে বহু দিন। কিন্তু তাই বলে টানা ২৪ হাজার বছর!
গবেষকদের চমকে দিয়ে এই ক্ষুদ্রাকার প্রাণীর ঘুম ভাঙল ২৪ হাজার বছর পর। এতদিন জীবন-মৃত্যুর মধ্যবর্তী দশায় ছিল সেটি। সম্প্রতি সুদূর উত্তরে সাইবেরিয়ার আলাজেয়া নদীর কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই প্রাণীর হদিশ পান বিজ্ঞানীরা।
এই জীবটি রটিফার প্রজাতির। এক ধরনের আনুবীক্ষণিক জীব। বহুকোষী এই জীবের ব্যতিক্রমী ক্ষমতা রয়েছে। ১৬৯৬ সালে প্রথম এটি খুঁজে পান জন হ্যারিস। জীবটি সর্বোচ্চ আধা মিলিমিটার দীর্ঘ হতে পারে। মূলত স্বাদু পানিতে দেখা মেলে। তাদের মুখের কাছে চাকার মতো অংশ থাকায় হুইল জীবও বলা হয়।
প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের সমস্ত জৈবিক ক্রিয়া স্বেচ্ছায় বন্ধ করে দিতে পারে এই জীব। এভাবে তারা মৃতের মতো থেকে যেতে পারে। এই জীবটির দীর্ঘ বছর ঘুমিয়ে থাকার প্রমাণ এই প্রথম নয়। এ প্রমাণ আগেও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এর আগে দেখা গেছে, হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচের তাপমাত্রাতেও এক দশক ঘুমিয়ে কাটাতে পারে এই জীব। কিন্তু এবার নিজের ঘুমের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে সেটি।
আলাজেয়া নদীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় যে রটিফেরা মিলেছে তার ঘুমের বয়স অন্তত ২৪ হাজার বছর। স্বাভাবিকভাবেই জীবটির বয়স আরও বেশি। এমনকি গবেষণাগারে নমুনা আনার পর বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অনুকূল পরিবেশে সেটি আবার অযৌন জনন পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ‘কারেন্ট বায়োলজি’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। আনন্দাবাজার।
এসএস