পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদির চুক্তির কারণ পারমাণবিক অস্ত্র?

পাকিস্তানের ‘স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট’ নামে যে প্রতিরক্ষা চুক্তি সৌদি আরব করেছে, তার প্রধান কারণ পাকিস্তানের পরমাণু শক্তি। সৌদির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, কাতারে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে রিয়াদ। প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন একটি ধারণা দানা বেঁধেছে যে যে কোনো সময় সৌদি আরব কিংবা উপসাগরীয় অঞ্চলের যে কোনো দেশে বেপরোয়া হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।
এবং যদি সত্যিই তা ঘটে, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহযোগিতা না ও মিলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র।
সেক্ষেত্রে পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ পাকিস্তান হতে পারে সৌদির জন্য বড় একটি ঢাল। ইসরায়েল যদি কখনও সৌদিতে বেপরোয়া হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির সুবাদে পাল্টা জবাব হিসেবে ইসরায়েলে পারমাণবিক হামলা চালানোর সুযোগ থাকবে সৌদির হাতে।
সৌদি আরবের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে এমন একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি যেখানে সামরিক সংক্রন্ত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত।”
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফও পরমাণু অস্ত্রের ব্যাপারটি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, এটি চুক্তির ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ নয়। তবে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশ ঠিক কোনটি, তা ও ভেঙে বলেননি খাজা আসিফ।
রয়টার্সকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলের বলেন, “এটা (পরমাণু অস্ত্র) চুক্তিতে আছে, কিন্তু এটিই চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নয়। কারো ওপর আগ্রাসন চালানোর কোনো ইচ্ছে আমাদের নেই। তবে কোনো পক্ষ যদি হুমকি হিসেবে দেখা দেয়, তাহলে চুক্তিতে থাকা সমস্ত বিষয় কার্যকর করা হবে।”
তিনি আরও বলেছেন, “এই চুক্তিতে অংশীদার হিসেবে অন্যান্য দেশও স্বাক্ষর করতে পারবে। তাদের জন্য দুয়ার খোলা আছে।”
প্রসঙ্গত, বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ। যদিও এটি এশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে একটি; তারপরও ৬ লাখ সেনাসমৃদ্ধ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে অন্যতম।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার সৌদি ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।
সৌদি নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং লন্ডনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাসান আলহাসান রয়টার্সকে বলেন, “সৌদির সামরিক বাহিনীতে কৌশলগত ও প্রথাগত সমরাস্ত্রের অভাবসহ অন্যান্য যেসব ঘাটতি আছে, সেগুলো পূরণে এই চুক্তিটি সহায়ক হবে।”
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ