মোদি কি আসলেই ট্রাম্পকে রুশ তেল কেনা বন্ধের আশ্বাস দিয়েছেন?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধের আশ্বাস দিয়েছেন বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারত বলেছে, অস্থির জ্বালানি বাজারে ভারতীয় ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করাই সবসময় তাদের অগ্রাধিকার। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, তেল ও গ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকারক ভারত। অস্থির জ্বালানি পরিস্থিতিতে ভারতীয় ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের দীর্ঘদিনের অগ্রাধিকার। আমাদের আমদানি নীতি সম্পূর্ণভাবে এই লক্ষ্যেই পরিচালিত।
তিনি বলেন, স্থিতিশীল জ্বালানি মূল্য ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা আমাদের জ্বালানি নীতির দু’টি প্রধান লক্ষ্য। এর মধ্যে রয়েছে আমাদের জ্বালানি উৎসের পরিধি বাড়ানো ও বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী বৈচিত্র্য আনা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বহু বছর ধরে আমরা জ্বালানি সংগ্রহে সহযোগিতা বৃদ্ধির চেষ্টা করে আসছি। গত এক দশকে এ ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ভারতের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ওই বিবৃতি দিয়েছে।
এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদির আশ্বাসের বিষয়ে বলেন, ‘‘তিনি (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ হবে। এটি তাৎক্ষণিকভাবে করা সম্ভব নয়; কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে শিগগিরই তা সম্পন্ন হবে।’’
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিমা বিভিন্ন শক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, বারবার রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল কেনার সমালোচনা করেছে। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে বলেছেন, ভারত কেবল নিজের নাগরিকদের জন্য সর্বোত্তম চুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি পশ্চিমা বিশ্বের দ্বৈত মানদণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। জয়শঙ্কর বলেন, ‘ইউরোপের সমস্যা মানেই বিশ্বের সমস্যা, কিন্তু বিশ্বের সমস্যা ইউরোপের সমস্যা নয়’, পশ্চিমা বিশ্বকে এই ধরনের মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত তেল কেনা অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে বলে ধারণা করা হয়। এর আগে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, মোদি ট্রাম্পকে ভয় পান।
সূত্র: এনডিটিভি।
এসএস