দুবাইয়ে ভারতীয়দের ভ্রমণ বিধিনিষেধ শিথিল

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারি ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল গত এপ্রিল মাসে। এরপর সেই মাসেরই শেষ সপ্তাহে দেশটি থেকে যাত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে দুবাই। তবে করোনার প্রকোপ কমে আসায় বিধিনিষেধে ছাড় দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই শহরটি। এরপরই আনন্দে ভাসছেন ভারতে আটকে পড়া প্রবাসীরা।
শনিবার এক প্রতিবেদনে দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানিয়েছে, করোনা টিকার উভয় ডোজ নেওয়া ব্যক্তিরা এখন থেকে কোনো বাধা ছাড়াই দুবাইতে প্রবেশ করতে পারবেন বলে শনিবার জানিয়েছে সুপ্রিম কমিটি অব ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইন দুবাই। আগামী ২৩ জুন (বুধবার) থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে গত ২৪ এপ্রিল ভারত থেকে আসা যাত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এরপর শত শত স্বাস্থ্যকর্মীসহ কয়েক হাজার বাসিন্দা ভারতে আটকা পড়েন।
খালিজ টাইমস বলছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে আরব আমিরাতে ফিরতে না পেরে অনেক ভারতীয় সেখানে চাকরিতে যোগ দিতে পারেনি। এতে তাদের বেতনও কেটে নেওয়া হয়। এছাড়া দেশটিতে বসবাসের বৈধ অনুমতি রয়েছে এমন অনেক ভারতীয় নাগরিকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
শারজাহ শহরের মেডকেয়ার হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত আন্নামা জন বলেন, জরুরি ছুটিতে এপ্রিলের ১৩ তারিখে ভারতে এসেছিলাম। তারপরই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে আটকা পড়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য দুবাইয়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে শুনে আমি আনন্দিত। আমি সিনোফার্মের দুই ডোজ টিকা নিয়েছি। যতো শিগগির সম্ভব আমি দুবাইতে ফিরতে চাই।
আরব আমিরাতের অ্যাস্টা হাসপাতালের চিকিৎসক ড. আবদু মাজিদ বলেন, ‘আমার ভাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আমি ভারতে এসেছিলাম। এরপরই আটকে পড়ি। আমি করোনা টিকার উভয় ডোজই নিয়েছি। টিকা গ্রহীতাদের জন্য ভ্রমণ বিধিনিষেধ শিথিলের খবর আমার চাপ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে।’

এর আগে খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরব আমিরাতের অ্যাস্টার ডিএম হেলথকেয়ার হাসপাতালের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা ফারা সিদ্দিকী জানিয়েছিলেন, ভারত থেকে আরব আমিরাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং ফ্লাইট বাতিলের কারণে আমাদের তিন শতাধিক স্টাফ ভারতে আটকা পড়েছিলেন। আটকা পড়াদের বেশিরভাগই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। নিয়মিত ছুটি কাটাতেই তারা ভারতে নিজেদের বাড়িতে গিয়েছিলেন।’
তবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় স্বস্তি ফিরেছে অনেকের মধ্যে। রিলায়েন্স অ্যালুমিনিয়াম অ্যান্ড গ্লাস এলএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহবাজ আলী বলছেন, আমরা এই খবরের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি গত ফেব্রুয়ারি-মার্চেই টিকা নিয়েছি। আমার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আমাকে সেখানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকা প্রয়োজন।
সূত্র: খালিজ টাইমস
টিএম