ভারত-কানাডার ওপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প

ভারতের চাল এবং কানাডার সারের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, মার্কিন কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে এ পদক্ষেপ নিতে পারেন তিনি।
শুক্রবার রাজধানী ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসে মার্কিন কৃষকদের জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন ট্রাম্প। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি বলেন, তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যে বর্ধিত শুল্ক আরোপ করেছে— তার জেরেই মার্কিন কৃষকদের এই প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “কৃষকরা যুক্তরাষ্ট্রের অপরিহার্য সম্পদ। তারা এই দেশের মেরুদণ্ডের অংশ। বছরের পর বছর ধরে অবহেলার কারণে মার্কিন কৃষক ও কৃষির অগ্রগতি স্থবির হয়েছিল। আমি যে শুল্কনীতি নিয়েছি, তার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এই যে আজ আমরা কৃষকদের এই প্রণোদনা দিতে পারছি, তা সম্ভব হয়েছে আমার শুল্কনীতির কারণে।”
ট্রাম্প বলেন, “কেবল মাত্র অর্থ উপার্জনের জন্যেই নতুন শুল্কনীতি প্রণয়ন করা হয়নি। আমাদের দেশীয় পণ্য, কৃষি এবং শিল্পকে রক্ষাও এই নীতির গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। মার্কিন উদ্যোক্তা এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন রক্ষা করা আমাদের প্রাথমিক দায়িত্ব।”
এ সময় সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বা ভোক্তা পর্যায়ে চালের বাজারে এখনও রাজত্ব করছে চাল এবং বিভিন্ন ভারতীয় কোম্পানি এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান জানতে চান তারা।
জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আপনারা একটা ভালো কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। আমি আরও অনেকে এ ব্যাপারে বলেছেন। আমরা এই ব্যাপারটি দেখব। এটার সামধান খুব সহজ…ফের শুল্ক আরোপ করলেই দু’মিনিটের মধ্যে এর সমাধান হয়ে যাবে।”
কানাডার সারের ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের কারণ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “কানাডা থেকে প্রায় নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে সার আমদানি করা হচ্ছে। আমদানির পরিমাণ এতটাই যে আমাদের নিজেদের উৎপাদিত সারের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্ভবত কানাডার সারের ওপর আমাদের উচ্চশুল্ক আরোপ করতে হবে, যদি আমরা আমাদের নিজেদের উৎপাদিত সারের বাজার ধরে রাখতে চাই।”
গত ২ এপ্রিল বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশের ওপর বর্ধিত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যেসব দেশের ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ভারত ও কানাডা অন্যতম। ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ ও কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
গত নভেম্বরে অবশ্য ভারতের কয়েকটি পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, গোলমরিচ, লবঙ্গ, জিরা, এলাচ, হলুদ এবং আদা অব্যাহতি পেয়েছে শুল্ক থেকে। এছাড়া আসাম চা, দার্জিলিঙ চা-সহ ভারতের সব ধরনের চা ও আছে এ তালিকায়। তবে বাসমতি চাল, চিংড়ি এবং সামুদ্রিক মাছের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়নি।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ