সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বুলগেরিয়ায় হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

বুলগেরিয়ায় দুর্নীতি দমনে ব্যর্থতার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সবচেয়ে দরিদ্র এই দেশটিতে স্থানীয় সময় বুধবার সরকারবিরোধী ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজধানী সোফিয়া ছাড়াও কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বিভিন্ন শহর ও নগরে চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বুধবার ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটিতে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ইউরো মুদ্রা গ্রহণের প্রস্তুতির মাঝেই সরকারের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন শুরু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা সোফিয়ার কেন্দ্রস্থলে পার্লামেন্ট ভবনে লেজার দিয়ে ‘‘পদত্যাগ’’, ‘‘মাফিয়া আউট’’ ও ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচন চাই’’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান প্রক্ষেপণ করেন।
সোফিয়ার ৬৪ বছর বয়সী বাসিন্দা ডোব্রি লোকভ বলেন, আমি মনে করি জনগণের চাপ ক্রমান্বয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। দেশে বহু বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। প্রথমত বিচারব্যবস্থার সংস্কার। বিচারব্যবস্থা ঠিক হলে বাকিগুলোও নিজে থেকেই ঠিক হবে।
বুলগেরিয়ার পার্লামেন্ট বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী রোসেন ঝেলিয়াজকভের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর রোসেনের সরকারের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দফায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা হচ্ছে।
এর আগে, গত সপ্তাহে দেশটির সরকার প্রথমবারের মতো ইউরোতে প্রণীত ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশ করে। বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। দেশটির বিরোধী দল ও বিভিন্ন সংগঠন বলেছে, সামাজিক সুরক্ষা খাতের অবদান এবং লভ্যাংশের ওপর কর বাড়িয়ে ব্যয় মেটানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করতেই লোকজন রাস্তায় নেমেছে।
সরকার বাজেট পরিকল্পনা প্রত্যাহার করলেও বিক্ষোভ থেমে নেই। দেশটিতে গত চার বছরে সাতটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা প্রকট আকার ধারণ করায় সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বুলগেরিয়ার আইটি পেশাজীবী অ্যাঞ্জেলিন বাহচেভানোভ বলেন, ‘‘বুলগেরিয়াকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর এখনই সময়। আমরা যেন অলিগার্কি, মাফিয়া ও তাদের প্রতিনিধিত্বকারী শক্তির হাত থেকে মুক্ত হতে পারি।’’
বুধবার বুলগেরিয়ার বার্তা সংস্থা বিটিএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শাসক জোটের অংশীদাররা দেশের ১ জানুয়ারি ইউরোজোনে প্রবেশের আগ পর্যন্ত পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বুধবারের বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক সংস্কারপন্থী বিরোধী দল ‘উই কনটিনিউ দ্য চেঞ্জ’র নেতা আসেন ভাসিলেভ বলেন, সরকার পদত্যাগ করলেও বুলগেরিয়া ইউরোজোনে প্রবেশ করবে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস