ইমরান-বুশরাকে ১৭ বছর কারাবাসের সাজা দিলেন আদালত

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের থেকে প্রাপ্ত উপহার নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় (তোশাখানা মামলা) পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি আদালত।
আজ শনিবার রাজধানী ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালতের (অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট) স্পেশাল জজ শাহরুখ আরজুমান্দ এই রায় ঘোষণা করেছেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারানোর প্রায় দেড় বছর পর, ২০২৩ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। প্রথমে তাকে পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগারে রাখা হয়েছিল, পরে সেপ্টেম্বরে আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাকে।
নিরাপত্তাজনিত কারণে আদিয়ালা কারগারেই আদালতের এজলাস বসেছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি। তোশাখানা সম্পর্কিত দু’টি মামলায় ইমরান ও বুশরাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলায় কারাবাসের সাজার পাশাপাশি ইমরান ও বুশরার প্রত্যেককে ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি করে জরিমাণা প্রদানেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগেও তোশাখানা সংক্রান্ত একটি মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১০ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত; তবে পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট সেই সাজা মওকুফ ঘোষণা করেছিলেন।
তোশাখানা মামলা
গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগ প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।
আইন অনুযায়ী, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন পরে তারা সেগুলো সরকার নির্ধারিত মূল্যে কিনে নিতে পারবেন। সেই মূল্যের পরিমাণ খুব বেশি নয়।
তোশাখানা থেকে উপহার কেনার পর তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া অবৈধ নয়, তবে পাকিস্তানে একে অনেকেই অনৈতিক বা নীতিগতভাবে ভুল মনে করেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা দুর্নীতি সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালের আগস্টে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে এ ইস্যুতে লিখিত অভিযোগ জমা দেন পাকিস্তান মুসলি লীগ নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা।
অভিযোগে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার সময় বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান এবং সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোট ৫৮টি দামি উপহার পেয়েছিলেন ইমরান খান। এসব উপহারের সবগুলো তিনি তোশাখানায় জমা দেননি এবং যেসব উপহার জমা দিয়েছেন— সেগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে কিনেছেন এবং বাইরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
বাইরে বিক্রি করা উপহারগুলোর মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব হাতঘড়ির আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ