ফ্লোরিডায় ভবন ধস: ধ্বংসস্তুপে জীবিতের সন্ধানে আশাবাদী বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে ধসে পড়া ভবন থেকে এখনও জীবিত মানুষের সন্ধান পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভবন ধসে নিহত এবং নিখোঁজদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বাইডেন এই মন্তব্য করেন।
গত বুধবার (২৪ জুন) গভীর রাত ১ টার দিকে মায়ামির উত্তরাংশের সার্ফসাইড এলাকায় আকস্মিকভাবে ধসে পড়ে চ্যাম্পলাইন টাওয়ার নামের ১২ তলা ওই আবাসিক ভবনের অর্ধেক অংশ। ভবনটির অধিকাংশ বাসিন্দা তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। ভবন ধসের পর ইতোমধ্যেই এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেছে।
এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও প্রায় দেড় শতাধিক নিখোঁজ থাকায় ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই চলছে উদ্ধার তৎপরতা। উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরাও জীবিত কারও সন্ধান পেতে ‘অলৌকিক’ কোনো ঘটনার ওপর নির্ভর করতে চাইছেন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করেন, ধ্বংসস্তুপের মধ্যে এখনও মানুষ জীবিত অবস্থায় আটকে থাকতে পারেন। যে কারণে উদ্ধার তৎপরতা আরও একমাস অব্যাহত রাখার জন্য ফেডারেল তহবিল থেকে আর্থিক বরাদ্দেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ফ্লোরিডার সার্ফসাইডে ভবন ধসের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। বৃহস্পতিবার ভোরে বাইডেন দম্পতি এয়ারফোর্স ওয়ানে করে মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
সেখানে বাইডেন বলেন, এই ঘটনায় আপনাদের মতো আমরাও অত্যন্ত দুঃখ ও শোকাহত দিন পার করছি। এসময় ভবন ধসের কারণ অনুসন্ধানের ওপরও জোর দেন বাইডেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মায়ামি-ডেইড কাউন্টির মেয়র ড্যানিয়েলা লেভিইন কাভা সন্ধান ও উদ্ধারকাজ বন্ধের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ভবনের অক্ষত অংশটিতে কাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে। যার কারণে আমরা ভোরের দিকে উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং একইসঙ্গে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া মাত্র আমরা উদ্ধার অভিযান আবার শুরু করবো।
অন্যদিকে মায়ামি-ডেইড কাউন্টি ফায়ার চিফ অ্যালান কমিনস্কি ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও জীবিত থাকতে পারে এমন কাউকে খুঁজে বের করতে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর বিপজ্জনক দিকটি তুলে ধরেন এবং উদ্ধার অভিযান স্থগিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, ‘ভবনের উত্তর ও দক্ষিণ কোণের কাঠামো অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে এবং যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে।’
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে নির্মিত ওই ভবনটিতে ১৩০টি ইউনিট ছিল। ধসের ফলে ১৩০টি ইউনিটের অর্ধেক, অর্থাৎ ৬৫টি ইউনিটই তছনছ হয়ে গেছে। ভবন থেকে ১৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৪৫ জন।
টিএম