ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মঙ্গলবার ভোটাভুটি

• হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের বাকি আর মাত্র ৯ দিন
• ক্ষমতাচ্যুত করতে মঙ্গলবারের মধ্যেই প্রতিনিধি পরিষদে ভোট
• উন্মত্ত জনতাকে ‘অভ্যুত্থানে প্ররোচণা’ দেওয়ার অভিযোগ
• শুধু ডেমোক্র্যাটরা নয়, রিপাবলিকানদের অনেকেরই অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
• অভিশংসন প্রক্রিয়া ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, বলছে হোয়াইট হাউস
মানি না, মানি না বলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে বাইডেনের জয় আর নিজের পরাজয় মেনে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরেরও। কিন্তু তবুও যেন শান্তি নেই ট্রাম্পের।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের বাকি আর মাত্র ৯ দিন। ক্যাপিটল ভবনে হামলায় সমর্থকদের উস্কে দেওয়ার অভিযোগে দাবি উঠেছে পদত্যাগের। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা নাছোড়বান্দা। তারা আর একদিনও ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদে রাখতে চান না। তারা চান অভিশংসন।
এ নিয়ে বেশ জোরেশোরেই মাঠে নেমেছে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। মঙ্গলবারের (১২ জানুয়ারি) মধ্যেই ট্রাম্পের অভিশংসন নিয়ে ভোট হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের হুইপ জেমস ক্লাইবার্ন।
যদিও আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ দিন ট্রাম্পের। গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সমর্থকরা মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক বলে পরিচিত ক্যাপিটল হিলের ভেতরে যেভাবে সহিংসতা চালিয়েছে, তাণ্ডবে লিপ্ত হয়েছে তাতে ক্ষমতা থেকে বিদায়ের মাত্র ৮ দিন আগে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে এই ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উন্মত্ত জনতাকে ‘অভ্যুত্থানে প্ররোচণা’ দেওয়ার অভিযোগ আনার পরিকল্পনা করছে ডেমোক্র্যাটরা। যদি অভিশংসন প্রক্রিয়া সফল হয় তাহলে ট্রাম্প হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দুইবার অভিশংসিত হওয়া একমাত্র প্রেসিডেন্ট।
তবে এর জন্য অভিশংসনের অভিযোগ প্রতিনিধি পরিষদে ভোটে পাস হতে হবে। তারপর বিষয়টি সিনেটে যাবে। যেখানে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দরকার হবে।
এদিকে কেবল ডেমোক্র্যাটরাই নয়, নিজ দল রিপাবলিকানদের অনেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালাতে সমর্থকদের উস্কে দেওয়ার অভিযোগ করছেন।
রিপাবলিকান সিনেটর প্যাট টুমি তো সরাসরি ট্রাম্পের পদত্যাগই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন,‘আমার মনে হয় দেশের জন্য এখন সবচেয়ে ভাল হবে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প পদত্যাগ করে দ্রুত বিদায় নেন। আমি জানি তা হয়তো হবে না। কিন্তু এটা হলেই ভাল হতো।’
এর আগে ট্রাম্পের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন আলাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মারকাউস্কি। নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর বেন স্যাসেও ট্রাম্পের অভিশংসন নিয়ে কথা বলেছেন।
এছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘সবচেয়ে জঘন্য প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রিপাবলিকান নেতা ও ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর আর্নল্ড সোয়ার্জিনেগার।
তবে রিপাবলিকানদের কেউ ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেবেন এমন ইঙ্গিত দেননি।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিষিদ্ধ হওয়ার পর অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে ট্রাম্প মঙ্গলবার টেক্সাসে যাবেন বলে রোববার হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে ট্রম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া ও মঙ্গলবার প্রতিনিধি পরিষদে এ বিষয়ে ভোটাভুটির উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করে হোয়াইট হাউস বলেছে, এতে দেশের মধ্যে বিভাজন আরও বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র: বিবিসি
টিএম