আইএসকে মদদ দিচ্ছে ভারত: ইমরান খান

পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) ভারত মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সম্প্রতি আইএস সন্ত্রাসীদের গুলিতে ১১ খনি শ্রমিক হত্যার ঘটনায় সোমবার এক বার্তায় ইমরান খান বলেন, ‘আমাদের সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থা এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরি করতে আইএসকে মদদ দিচ্ছে ভারত।’
গত সপ্তাহের শনিবার বেলুচিস্তানে আইএস জঙ্গিদের গুলিতে ১১ কয়লা খনি শ্রমিককে অপহরণ করে আইএস। এরপর রোববার দিনের শুরুতে বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরের একটি কয়লাখনির পাশের খোলা স্থানে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
পাকিস্তান পুলিশের কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম আলি জানান, আইএস এর বন্দুকধারীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ছয় জন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাকি পাঁচ জন প্রাণ হারান।
পরে নিজস্ব টেলিগ্রাম কমিউনিকেশন্স চ্যানেলের মাধ্যমে নিজেদের সংবাদ সংস্থা আমাক নিউজ এজেন্সিতে দেওয়া বার্তায় ওই বন্দুক হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট।
পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সমস্যা শিয়া-সুন্নী দ্বন্দ্ব উস্কে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ভারত অগ্রসর হচ্ছে অভিযোগ করে বার্তায় ইমরান খান বলেন, ‘আইএসসহ বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীকে মদত দিয়ে শিয়া এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যার মাধ্যমে পাকিস্তানে সাম্প্রায়িকতাকে উস্কে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। তবে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাসমূহ ইতোমধ্যে এই পরিকল্পনা আঁচ করতে সমর্থ হয়েছে এবং ইতোমধ্যে জঙ্গিদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’
পাকিস্তানের প্রান্তিক এলাকাগুলোতে জনবসতি বিরল হওয়ার সুযোগ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো নিচ্ছে উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘১৯৮৯ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিপরীতে যে সশস্ত্র গ্রুপগুলো তৈরি হয়েছিল, সেগুলো গত দু’দশকে সেগুলোর কারণে আমাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন তারা আইএসে একীভূত হচ্ছে, আর তাদের মদদ দিচ্ছে ভারত।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী সরকার যে কোনো বহিঃশত্রুর তুলনায় ভারতের জন্য অধিক ক্ষতিকর মন্তব্য করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ ভারতের সর্বনাশের জন্য কোনও বাইরের শত্রু নয়, মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারই যে যথেষ্ট , তা সময়ই বলে দেবে।’
২০১৯ সালে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারা বাতিল করে বিজেপি সরকার। ফলে সাংবিধানিক ভাবে ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারায় জম্মু ও কাশ্মির, আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল থেকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত হয় এই প্রদেশ।
ভারতের এই সংবিধান সংস্কারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান। তখন থেকেই উপমহাদেশের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের সম্পর্ক আরো বেশি তিক্ত হয়ে ওঠে।
সূত্র: দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এসএমডব্লিউ