৫৬ বছরের অপেক্ষা শেষে চিলাহাটি-হলদিবাড়ির রেলযোগাযোগ চালু

পাঁচ দশকের বেশি সময়ের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে উদ্বোধনের এক বছর পর অবশেষে বাংলাদেশের চিলাহাটি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিবাড়ির মধ্যে পণ্যবাহী রেল চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের নীলফামারির চিলাহাটির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে ওই রেল।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রোববার হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে পাথরবোঝাই ৪০টি বগি বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। বিকেলে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সেটি। দুই দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ায় খুশি দু’পারের বাসিন্দারা।
রোববার সকাল ১১টার দিকে পণ্যবাহী ট্রেনটি বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু কথা থাকলেও তা হয়নি। এর পর ট্রেনটি বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটের দিকে হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। ট্রেনটি দেখতে রেললাইনের দু’ধারেই অপেক্ষা করছিলেন সাধারণ মানুষ।
এর আগে, শনিবার ভারতের জাতীয় দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমসকে দেশটির রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘রোববার থেকে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে ফের বাণিজ্যিক রেলযোগাযোগ শুরু হচ্ছে। পাথরকুচির চালান নিয়ে একটি মালবাহী ট্রেন হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি যাবে।’
সেই ব্রিটিশ আমল থেকে রেল যোগাযোগ ছিল চিলাহাটি ও হলদিবাড়ির মধ্যে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এই ভূখণ্ডের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। তারপর তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের নীলফামারি জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার মধ্যে রেল যোগাযোগ অব্যাহত ছিল ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত।
১৯৬৫ সালে কাশ্মির ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এই রুটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়; তারপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও বহু বছর বন্ধ ছিল এই যোগাযোগ।
২০১৫ সালে দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের রেল কর্মকর্তাদের মধ্যে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় দেশের রেল বিভাগের কর্মকর্তারা হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে ব্রডগেজ রেল লাইন স্থাপনে ঐকমত্যে পৌঁছান।
পরে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উভয় দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এসএস