মেরকেলের উত্তরসূরির খোঁজে জার্মানি

জার্মানির আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নতুন নেতা বাছাই হবে শনিবার। চ্যান্সেলর হিসেবে মেরকেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হওয়ার দৌঁড়ে রয়েছেন তিন নেতা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে লিখেছে, করোনাভাইরাস সংকটের কারণে দুই দফা বিলম্ব সত্ত্বেও জার্মানির সিডিইউ দলকে বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলের উত্তরসূরি খোঁজার সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী শনিবার।
এই নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল সিডিইউ এর অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকছে না।
সশরীরে উপস্থিত থেকে দলীয় সম্মেলন আয়োজন এখনো সম্ভব না হওয়ায় আগামী শুক্র ও শনিবার ডিজিটাল সম্মেলেন মিলিত হবেন দলটির নেতারা। সেখানেই তাদের বেছে নিতে হবে আগামী দিনে দলের শীর্ষ নেতাকে।
তবে নেতা নির্বাচনের কিছু জটিলতাও রয়েছে। যদি কোনো প্রার্থী সরাসরি কমপক্ষে ৫০ শতাংশ সমর্থন না পান তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ‘রান-অফ’ ভোটের মাধ্যমে দুই সেরা প্রার্থীর মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে।
প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর অবসর নিচ্ছেন চ্যান্সেলর মেরকেল।
আর নয় মাস পর জার্মানির সাধারণ নির্বাচন। সিডিইউ দল আবারও সবচেয়ে বেশি আসন পেলে এই সম্মেলনের মধ্য থেকে নির্বাচিত দলটির নতুন নেতাই হবেন ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশটির আগামী দিনের চ্যান্সেলর।
দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার শীর্ষে থাকার পর চ্যান্সেলর হিসেবে অবসর নিতে চলেছেন মেরকেল। তার মতো তুখোর ও কম বিতর্কিত নেতার শূন্যস্থান পূরণে যোগ্য প্রার্থী খোঁজার কাজ তাই দলটির জন্য যথেষ্ট কঠিন হবে।
দলের যে তিনজন নেতা প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে এসেছেন, তাদের মধ্যে কেউই জনপ্রিয়তার বিচারে মেরকেলের ধারেকাছে আসতে পারছেন না।
দলের যে তিনজন নেতা প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে এসেছেন, তাদের মধ্যে কেউই জনপ্রিয়তার বিচারে মেরকেলের ধারেকাছে আসতে পারছেন না। ভোটাভুটির মাধ্যমে তাদের মধ্য থেকেই একজনকে বেছে নিতে হবে।
ক্ষমতাসীন দল তথা জার্মানির ভবিষ্যত নেতা হওয়ার দৌঁড়ে রয়েছেন নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট, সাবেক পরিবেশমন্ত্রী নরবার্ট রোটগেন এবং ‘বিক্ষুব্ধ’ হিসেবে পরিচিত নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।
এই নির্বাচন শুধু ক্ষমতাসীন দল সিডিইউ এর অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকছে না। দলটি মেরকেলের মধ্যপন্থি নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে কিনা, নতুন নেতাকে সেই সিদ্ধান্তও নিতে হবে।
মেরকেলঘনিষ্ঠ লাশেট সভাপতি হলে একই নীতিতে চলবেন বলে ধারণা। একের পর এক দলীয় নেতার খোলাখুলি সমর্থনে আপাতত ভালো অবস্থানে আছেন তিনি। মেরকেলও তার যোগ্যতার সার্টিফিকেট দিয়েছেন।
অন্যদিকে ম্যার্ৎস ‘মেরকেলের নীতি’ থেকে সরে আসার পক্ষে। সেক্ষেত্রে দলের মধ্যে ঐক্যের বদলে বিভাজনের আশঙ্কা রয়েছে। দলকে আধুনিক যুগের আরও উপযোগী করে তোলার অঙ্গীকার করছেন রোটগেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে না এলেও জনপ্রিয়তার বিচারে যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছেন জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান। তিনি লাশেটের প্রতি সমর্থন জানালেও দলের মধ্যে অনেকে অবশ্য তাকেই সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইছে। তিনি নিজেও সম্প্রতি সেই সমর্থনের মাত্রা যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে।
ডয়েচে ভেলে লিখেছে, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) জার্মানির আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভালো ফল করলেও চ্যান্সেলর পদে প্রার্থী দিতে পারবে কিনা, সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে।
বাভেরিয়ার ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়নের (সিএসইউ) নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী দলের পক্ষে চ্যান্সেলর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। করোনা সংকটের সময় তার নেতৃত্ব যথেষ্ট সমর্থন আদায় করেছে।
এএস