মাইনাস ২৫ ডিগ্রিতে কাঁপছে স্পেন

স্পেনের মধ্যাঞ্চলের মানুষজন সপ্তাহজুড়ে নজিরবিহীন তুষারঝড়ের পর এবার হিমশীতল ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করছে। তাতে প্রাণহানি হয়েছে এক ডজনের বেশি। প্রবীণদের ঘরে থাকার ব্যাপারে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার রাতে রাজধানী মাদ্রিদের পূর্বের মোলিনা দে আরাগন ও তেরুয়েলে অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; যা গত ২০ বছরের মধ্যে স্পেনের সবচেয়ে শীতলতম রাত।
তুষারঝড় ফিলোমেনার সময় পড়া তুষার তীব্র ঠান্ডায় আরও শীতল বরফে পরিণত হওয়ায় সেসব স্তুপে ঢেকে যাওয়া সড়ক আর পথে গাড়ি আটকে পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
আবহাওয়াজনিত কারণে কমপক্ষে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন বার্সেলোনার গৃহহীন মানুষও রয়েছেন। এর আগে ফিলোমেনা নামক নজিরবিহীন তুষারঝড়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছিল।

ফিলোমেনার সময় পড়া তুষার তীব্র ঠান্ডায় আরও শীতল বরফে পরিণত হওয়ায় সেসব স্তুপে ঢেকে যাওয়া সড়ক আর পথে গাড়ি আটকে পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মক বিপর্যস্ত।
সাধারণত স্পেনে শীতকালে তেমন একটা ঠান্ডা পড়ে না। তবে এবার রেকর্ড ঠান্ডার সঙ্গে চল্লিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তুষারপাত হওয়ায় কাহিল মানুষজন এভাবে ঘরে আটকে পড়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছেন না।
মোলিনা দে আরাগনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করার পর স্থানীয়রা শহরটিকে যে ‘স্পেনীয় সাইবেরিয়া’ বলে অভিহিত করতেন, তার স্বার্থক হয়েছে এবার।)
রাজধানী মাদ্রিদের ১৯৭ কিলোমিটার উত্তরপূর্বের মোলিনা দে আরাগনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করার পর স্থানীয়রা শহরটিকে যে ‘স্পেনীয় সাইবেরিয়া’ বলে অভিহিত করতেন, তার স্বার্থকতা পাওয়া যাচ্ছে এবার।
বিবিসির প্রতিবেদক জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এমন তাপমাত্রা বিরাজ করবে। তিনি জানান, দিন দিন জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এত তুষার পড়েছে যে পাশের বাড়িতে যাওয়ার উপায় পর্যন্ত মিলছে না।
বার্সেলোনায় দুজন গৃহহীন ছাড়াও আরও যেসব মৃত্যুর খবর জানা যাচ্ছে, এরমধ্যে দুজন মাদ্রিদে, দুজন মালাগায় এবং একজন জারাগোনা নামক এলাকায়। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে প্রাণহানি আরও বাড়বে বলে শঙ্কা।

ওইদিন রাতে রাজধানী মাদ্রিদের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। করোনা রোগীর চাপে এমনি নাজুক পরিস্থিতিতে থাকা হাসপাতালগুলো তুষারে পড়ে পা ভাঙাসহ নানান রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
মেডিকেল সূত্র স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, শুধু সোমবার মাদ্রিদের আঞ্চলিক হাসপাতালগুলোতে হাত-ভাঙার মতো অসুস্থতা নিয়ে এসেছেন এক হাজার ২০০ এর বেশি মানুষ
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে আরও অনেক স্থানে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে আরও অনেক স্থানে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এছাড়া বিদ্যুতের কারণে এক সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাদ্রিদ-বার্সেলোনা দ্রুতগতির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। অবশ্য পরে তা সচল করা হয়।
জোলি আসেনসিও নামে স্থানীয় এক নারী বিবিসিকে বলেছেন, ‘আরও কয়েকদিন এরকম ঠান্ডা থাকবে। জীবন একেবারে কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। প্রচুর তুষারপাত হয়েছে, বাড়ি ও রাস্তাগুলোতে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে আছে।’
এএস