ভারতে নতুন আইন ঘিরে অচলাবস্থা, তীব্র কৃষক বিক্ষোভ

ভারতে নতুন তিনটি কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে দেশটির হাজার হাজার কৃষক রাজধানী নয়াদিল্লির আশপাশে তীব্র বিক্ষোভ করেছেন। নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কয়েক দফার আলোচনায় যথাযথ সিদ্ধান্ত না আসায় রোববার নয়াদিল্লি-জয়পুর সড়কে কৃষকরা অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ করেন।
সংস্কারকৃত আইনের ফলে দেশটির কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে আশ্বাস দিয়েছিলেন; ক্ষুব্ধ কৃষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর কাছে বিক্ষোভ করেছেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশটিতে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, তা সমাধানে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের ছয় দফার বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের কৃষি সংস্কার আইনের বিরুদ্ধে সারাদেশের কৃষকদের অন্তত ত্রিশটি সংগঠনের নেতৃত্বে সংযুক্ত কিষাণ আন্দোলন নামে একটি জোট গড়ে উঠেছে।
এই জোটের নেতা কমল প্রীত সিং পান্নু বলেন, নতুন আইনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ জানাতে নয়াদিল্লি অভিমুখে শত শত কৃষক ট্রাক্টর ট্রলি পদযাত্রা করবেন। সরকার আমাদের আন্দোলন দমন করতে চায়। কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
রাজধানী নয়াদিল্লিতে কৃষকদের প্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি, পুলিশ মোতায়েন এবং সড়কে ব্যারিকেড বসিয়েছে। তবে কৃষকদের এই আন্দোলনে দেশটির বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি কিছু জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সমর্থন জানিয়েছেন।
আমি বর্তমানে ভারতের নতুন কৃষি সংস্কার বিলগুলো নিয়ে পড়াশোনা করছি। আমার মনে হচ্ছে এই আইনগুলো ত্রুটিপূর্ণ এবং কৃষকদের জন্য ক্ষতিকর হবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু
তিনি বলেন, আমাদের কৃষি আইনে পরিবর্তন দরকার। তবে নতুন আইনে কৃষকদের চেয়ে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ বেশি প্রাধান্য পাবে। ভারতের কৃষকদের চেতনা এবং নৈতিক শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এই অর্থনীতিবিদ।
কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের প্রক্রিয়া সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দিতে দেশটির সরকার সম্প্রতি তিনটি কৃষি আইন জারি করেছে। এই আইনের ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রিতে বেশি বিকল্প পাবেন বলে দেশটির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকার দাবি করলেও কৃষকরা এর বিরোধিতা করছেন।
কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা বিক্ষোভ করে আসছেন দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের লাখ লাখ কৃষক।
এসএস