চীনে খনিধসে আটকা শ্রমিকরা এখনও বেঁচে আছেন

নয় দিন আগে চীনের একটি সোনার খনিতে বিষ্ফোরণের পর ভূগর্ভে আটকা পরা ২২ জন শ্রমিকের মধ্যে ১২ জন এখনও বেঁচে আছেন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যমের বরাতে মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রাণের অস্তিত্ব আছে এমনটা টের পাওয়ার পর উদ্ধারকর্মীরা তারের ক্যাবলের মাধ্যমে ভেতরে খাবার পাঠালে আটকে পরা শ্রমিকরা নোট পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন, তাদের উদ্ধারে এই অভিযান যেন বন্ধ না করা হয়।
ভূগর্ভে আটকে পরা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য একটি টেলিফোন সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। তবে বিষ্ফোরণের পর নিখোঁজ বাকি ১০ জন শ্রমিকের অবস্থা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি।
চীনে অবশ্য খনি দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে প্রায়ই দেশটিতে এমন দুর্ঘটনা হয়।
গত ১০ জানুয়ারি চীনের পূর্বাঞ্চলের শ্যাংনদং প্রদেশের ইয়ানতাই এলাকায় নির্মাণাধীন হুশান সোনার খনিতে বিস্ফোরণের পর বহিরাগমন পথ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হলে খনিটির ২২ জন ভূগর্ভে আটকা পড়েন।
জীবিতদের খোঁজে এরপর থেকে তল্লাশি শুরু করে উদ্ধারকর্মীরা। অবশেষ নয়দিন পর তারা টের পায় যে ভেতরে আটকা শ্রমিকদের অনেকে এখনও বেঁচে আছেন। তাদের উদ্ধারে এখনও তৎপরতা চলছে।
উপর থেকে ড্রিলের মাধ্যমে একটি দীর্ঘ ও পাতলা যোগাযোগ যন্ত্রের মাধ্যমে উদ্ধারকর্মীরা কিছু খনি শ্রমিকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সমর্থ হওয়ার পর ভেতরের গর্তে তারা খাদ্য, ওষুধ, কাগজ ও পেন্সিল পাঠায়।
কাগজ ও পেন্সিল ব্যবহার করে এরপর ভেতর থেকে শ্রমিকদের পাঠানো একটি চিঠিতে জানানো হয় যে খনির মাঝামাঝি আটকরা পরা ১২ জন শ্রমিক এখনও জীবিত আছেন। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
চিঠি অনুযায়ী, জীবিতদের একজন আহত। বাকি ১০ জনের অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানেন না তারা। জীবিত উদ্ধার হওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। ব্যথানাশক ওষুধ চেয়ে শেষে তারা উদ্ধারকর্মীদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
সোমবার শ্যানদং এর ইয়ানতাই শহরের ডেপুটি সেক্রেটারি চেন ফেই বলেছেন, খনির ভেতরে আটকা পরা শ্রমিকরা এখনও খুবই দুর্বল। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন সংযোগ তৈরি করা হয়েছে।
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তৃতীয় আরেকটি খাদ তৈরি করা হচ্ছে। তারা (আটকা শ্রমিকরা) খুব আত্মবিশ্বাসী ও আশাবাদী যে, শিগগিরই তাদেরকে খনির ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হবে।’
সংযোগ স্থাপনের পর খনি শ্রমিকদেরকে যেসব ওষুধ ও খাবার পাঠানো হয়েছে তা তাদেরকে আরও দুইদিন বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন ইয়ানতাইয়েরর ডেপুটি সেক্রেটারি চেন ফেই।
ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়াও আটকা পরা শ্রমিকরা প্রদাহজিনত রোগের ওষুধসহ ও আহতদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টেপও চেয়েছেন। তারা আরও বলেছেন যে, তারা এখন ভূগর্ভস্থ পানির উচ্চ স্তরে রয়েছেন।
উদ্ধারকর্মীদের একজন বলেন, তারা যে কোনো মূল্যে এখন ওসব শ্রমিককে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এএস