সুড়ঙ্গ দিয়ে বন্দী পালানোর পর গণগ্রেফতারে নেমেছে ইসরায়েল

এ মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত একটি কারাগার থেকে কয়েকজন বন্দির পালানোর পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী বড় ধরনের একটি গ্রেফতার অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংঘ আদামির বলছে, ৬ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আদামিরের কর্মী মিলেনা আনসারি আলজাজিরাকে বলেছেন, ৬ সেপ্টেম্বর বন্দীদের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে আমরা দিনে ১৪ জনের গ্রেফতার হওয়ার তথ্য পেয়েছি। এটা ইসায়েলে গ্রেফতার হওয়া ফিলিস্তিনিরা বাদে।
সুড়ঙ্গ খুড়ে যে ছয়জন বন্দি পালিয়েছিলেন তাদের সবাইকে আবারও কারাগারে ঢোকানো হয়েছে। সর্বশেষ যে দুজন পলাতক ছিলেন রোববার সকালের জেনিন সিটিতে তারা আত্মসমর্পণ করেন।
কারাগার থেকে ছয় জন পালানোর পর তাদের সন্ধানে বেশ বড় রকমের অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। জেনিন শহরে পলাতকদের পরিবারের সদস্যদেরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গ্রেফতারও করা হয় কয়েকজনকে।
জেনিনের পাশপাশি এই গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ রামাল্লাহ, হেবরন, নাবুলাস ও আশপাশের গ্রামেও চলে।
গ্রেফতার করা হচ্ছে শিশুদেরও
সাম্প্রতিক এই অভিযানে বেশ কয়েকজন শিশুকেও তুলে নেওয়া হয়েছে। রামাল্লাহ কাছাকাছি একটি শহর নিলিন থেকে ১৩ বছর বয়সী মুস্তাফা আমিরাকে গত সপ্তাহে গ্রেফতার করে ইসরায়েলি সৈন্যরা।
তারা বাবা খলিল আমিরা আলজাজিরাকে বলেছেন, মুস্তাফা ও তার আরেক ভাই মুহাম্মদকে (১৫) গ্রেফতার করে পিটিয়েছে অন্তত জনাদশেক ইসরায়েলি সৈন্য। এরপর সারারাত কোনো খাবার, পানি না দিয়ে তাদের আটকে রাখে পুলিশ।
মুস্তাফার ছবিতেও দেখা যাচ্ছে তার চোখ ফোলা, সেই সঙ্গে ক্ষতের চিহ্নও রয়েছে।
আমিরা বলেন, ইসরায়েলি সৈন্যরা তাকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ছোট এই ছেলেটাকে অস্ত্রধারী এতগুলো মানুষ কেন পেটাবে? তার নামে কোনো মামলা থাকলে তারা আইনিভাবে ব্যাপারটা সামনে আনতে পারতো।
আমিরা জানান তিনি তার ছেলেকে আপাতত স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। কারণ তার সঙ্গে যা হয়ে গেছে, সেটা এখনও সেস ভুলতে পারেনি।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের একজন প্যারাডেমিক জিয়াদ আবু লতিফা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অপ্রাপ্তবয়সস্কদের নির্যাতিত হওয়াটা চলমান একটা সমস্যা।
তিনি বলেন, আমি এমন বেশ কিছু ঘটনা জানি, যেখানে অপ্রাপ্তবয়স্কদের পেটানো হয়েছে, এমনকি রাইফেল বাট দিয়েও পেটানো হয়েছে তাদের।
এদিকে এ অভিযানের অংশ হিসাবে বুধবার ইসরায়েলি সৈন্যরা রামাল্লার একটি শ্রমিক সংঘের অফিসে অভিযান চালায়। এরকম আরও কিছু ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের খবরও রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ছাত্রদের গ্রেফতারের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা।
সূত্র : আলজাজিরা।
এনএফ