ভারতের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরা টিকা নেবেন দ্বিতীয় পর্যায়ে

ভারতে করোনা টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা নেবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও টিকা নেবেন ওই সময়ে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীসহ পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী সব মন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্যদের টিকা দেওয়া হবে।
টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে এক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী ও লোকসভা-বিধানসভার সদস্যদের টিকা নিতে ব্যস্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা পাবেন তারা।
যখন ভারত সরকার টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা করছে, তখন সম্মুখসারির করোনযোদ্ধার তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী, এমপি ও সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন হরিয়ানা, বিহার ও ওড়িষা– এই তিন বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
তবে অনুরোধে কর্ণপাত করেননি ভারতের বিজেপিদলীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি; বরং তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, টিকা দেওয়ার জন্য এই তালিকা সরকার তৈরি করেছে, এটা যেন কেউ লঙ্ঘন না করেন।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধাদের দেওয়া হচ্ছে ভারতে অনুমোদন পাওয়া সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার তৈরি কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নামক দুটি টিকা।
তালিকা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধাদের টিকার আওতায় আসার কথা থাকলেও ভারতের অনেক রাজ্যের এ তালিকাভূক্ত লোকজন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সংক্রান্ত ভীতির কারণে টিকা নিতে ইতস্তত করছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ফলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাদান কর্মসূচি হিসেবে স্বীকৃত ভারতে যতজনকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সরকার, প্রথম পর্যায়ের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সে তুলনায় স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধাদের টিকা নেওয়ার সংখ্য অনেক কম।
ভারতের অন্যতম থিংকট্যাঙ্ক সংস্থা ‘নীতি আয়োগের’ টিকা স্ট্র্যাটেজি কমিটির প্রধান ভিকে পাল টিকা নেওয়ার জন্য দেশের সব স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনারা দয়া করে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন; পুরো বিশ্ব টিকার জন্য হাহাকার করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় যদি আপনারা….দেশের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও নার্সরা যদি টিকা নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে সেটা হবে আমাদের সবার জন্যই খুব দুঃখজনক। কারণ, ভবিষ্যতে এই মহামারি কোন রূপ নেবে— তা কেউ বলতে পারে না।’
টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন টিকা নেয়ার পর মাত্র .১৮ শতাংশ রোগীর অস্বস্তিকর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শঙ্কা রয়েছে এবং এর কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার আরও কম, মাত্র .০০২ শতাংশ।
ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা যদিও তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পার করছে, তবে সরকার জানিয়েছে— স্থানীয়ভাবে তৈরি টিকা কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন উভয়ই নিরাপদ।
এসএমডব্লিউ