উঠল ১০৭ দিনের লকডাউন, উদযাপনে মাতল সিডনি

অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী ও দেশটির বৃহত্তম শহর সিডনিতে সোমবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে টিকার ডোজ সম্পূর্ণকারীদের জন্য শিথিল করা হয়েছে লকডাউন। তার মধ্যে দিয়ে কার্যত ১০৭ দিনের দীর্ঘ লকডাউন থেকে বেরিয়ে এল সিডনি।
সোমবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মধ্যরাতে লকডাউন শিথিলের পরপরই বাড়ি থেকে বেরিয়ে তা উদযাপন করা শুরু করে দিয়েছেন সিডনির বাসিন্দারা। কেউ বা বন্ধু-বান্ধবসহ গিয়েছেন পানশালায়, কেউ সড়কে বেরিয়ে উল্লাস করেছেন, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়ি গিয়েছেন অনেকেই।
করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ রুখতে গত জুনের মাঝমাঝি থেকে সিডনিতে লকডাউন ঘোষণা করেছিল নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার।
সরকারি এই ঘোষণার ফলে সিডনির বাসিন্দাদের জন্য বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়ে আসছিল এতদিন। লাইব্রেরি, ব্যয়ামাগার, সিনেমা হল, থিয়েটার, সুইমিং পুল প্রভৃতি বন্ধ ছিল এতদিন। রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোতে কেবল চালু ছিল হোম ডেলিভারি সেবা।
সোমবার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে সব বিধিনিষেধ। ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিডনি। তবে এসব সুবিধা কেবল নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেইসব বাসিন্দাদের জন্য, যারা টিকার দুটি ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।
যারা এখনও টিকার একটি ডোজও নেননি, তাদের জন্য জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়ার বিষয়ে এখনও জারি আছে নিষেধাজ্ঞা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউন শিথিলের পর থেকে সিডনির সেলুন ও পার্লারগুলোতে মানুষের লম্বা লাইন দেখা গেছে।

সিডনির লর্ড গ্ল্যাডস্টোন হোটেলের পানশালাটি শহরের একটি বিখ্যাত পানশালা। লকডাউন শিথিলের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে খদ্দেরদের সমাগমে সরগরম হয়ে উঠেছিল সেটি।
ওই হোটেল ও পানশালার মালিক প্যাট ব্ল্যাক বিবিসিকে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘এটি সিডনির সেরা সোমবার। এমন সোমবার আগে কখনও দেখা যায়নি। এমনকি কোভিডের আগেও নয়।’
প্যাট ব্ল্যাক জানান, সিডনির ক্যাফে ও রেস্তোরাঁগুলোতেও বেশ ভিড় দেখা গেছে সোমবার মধ্যরাত থেকে।

‘রান্নাঘরগুলো খুবই ব্যস্ত। লোকজন ক্রমাগত আসছে, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে, বিয়ার পান করছে….কতদিন আমি এমন দৃশ্য দেখিনি!’
সিডনি যেমন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর, তেমনি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল শহরও এটি। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি এবং তার এক পঞ্চমাংশই বসবাস করেন সিডনিতে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সিডনিতে বসবাসরত প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৯০ শতাংশ মানুষ।
প্রাদেশিক সরকারের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণকরা মানুষের শতকরা হার ৮০ শতাংশে পৌঁছালে শহরটি পুনরায় কোভিডপূর্ব জীবন-যাপনে ফিরে যেতে পারবে বলে আশা করছেন তারা।
‘বর্তমানে যে গতিতে টিকাদান কর্মসূচি চলছে, আমরা আশা করছি দ্রুত আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’- বিবিসিকে বলেন ওই কর্মকর্তা।
এসএমডব্লিউ