অর্থনীতির নোবেল পেলেন তিনজন

শ্রমবাজারে একজন ব্যক্তির আয়ের ওপর ন্যূনতম মজুরি, অভিবাসন কিংবা পরিবারের কোনো সদস্যের আরও একটি বছর স্কুলে কাটানোর প্রভাব কেমন হয় সে বিষয়ে গবেষণা এবং অর্থনীতির গবেষণায় নতুন কৌশল উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর অর্থনীতিতে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন অর্থনীতিবিদ।

সোমবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ২০২১ সালের অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে। নোবেলজয়ী তিন অর্থনীতিবিদ হলেন— ডেভিড কার্ড, জোশুয়া ডি অ্যাংগ্রিস্ট ও গুইডো ইমবেনস।

কানাডীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন অর্থনীতিবিদ ডেভিড কার্ড; যিনি প্রাকৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রম অর্থনীতিতে ন্যূনতম মজুরি, অভিবাসন এবং শিক্ষার প্রভাব বিশ্লেষণ করে অর্থনীতির এই নোবেলের অর্ধেক পেয়েছেন। আর অর্থনীতির গবেষণায় নতুন কৌশল উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে বাকি অর্ধেক পাবেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ জোশুয়া ডি অ্যাংগ্রিস্ট এবং ডাচ বংশোদ্ভূত মার্কিন অর্থনীতিবিদ গুইডো ডব্লিউ ইমবেনস।

৬৫ বছর বয়সী ডেভিড কার্ড যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতির অধ্যাপক। জোশুয়া ডি অ্যাংগ্রিস্ট (৬১) ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং ইমবেনস (৫৮) স্ট্যানফোর্ড গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেসের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক।

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বলেছে, অর্থনীতিবিদ ডেভিড কার্ড শ্রমবাজারে ন্যূনতম মজুরি, অভিবাসন এবং শিক্ষা কর্মের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে প্রাকৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন অন্তর্দৃষ্টি হাজির করেছেন। অপর দুই অর্থনীতিবিদ অ্যাংগ্রিস্ট এবং ইমবেনস অর্থনীতির কার্যকারণ সম্পর্ক নিয়ে নতুন গবেষণা কৌশলের সন্ধান দিয়েছেন।

গত বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন দুই মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল আর. মিলগ্রোম ও রবার্ট বি. উইলসন। নিলাম তত্ত্বের উন্নতি এবং নতুন নিলাম বিন্যাস উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে তারা নোবেল পান। 

উনবিংশ শতাব্দীতে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল আবিষ্কার করেছিলেন ডিনামাইট নামে ব্যাপক বিধ্বংসী বিস্ফোরক; যা তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পত্তির মালিক করে তোলে। মৃত্যুর আগে তিনি উইল করে যান প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়ন, শান্তি ও সাহিত্য— এই ৫টি বিষয়ে যারা বিশেষ অবদান রাখবেন তাদের যেন এই অর্থ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

১৯০১ সালে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। পরে ১৯৬৮ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভেরিজ রিক্সব্যাংক অর্থনীতিতে পুরস্কার প্রবর্তন করে। পরের বছর থেকে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু করে।

সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের সম্মানে এই পুরস্কারের পুরো নাম রাখা হয় ‘আলফ্রেড নোবেল স্মৃতি রক্ষার্থে অর্থনীতিতে ভেরিজ রিক্সব্যাংক পুরস্কার।’

গত ৪ অক্টোবর চিকিৎসার নোবেল বিজয়ী হিসেবে লেবানিজ বংশোদ্ভূত মার্কিন বিজ্ঞানী আর্ডেম পাতাপুতিয়ান ও মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াসের নাম ঘোষণার মাধ্যমে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার অনুষ্ঠান শুরু হয়। অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো।

এসএস/জেএস