ভারতে কৃষকদের ওপর হামলা, মহাপঞ্চায়েতের ডাক

ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে কৃষক সংগঠনগুলোর নেতারা সম্প্রসারিত বৈঠক বা ‘মহাপঞ্চায়েতের’ ডাক দেওয়ার পর আন্দোলনরত কৃষকদের জমায়েতের মূল কেন্দ্র দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তবর্তী সিংঘু এলাকায় হামলা হয়েছে।
শুক্রবার অতর্কিত এই হামলায় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে ২০০ জনের একটি দল অনেকটা আকস্মিকভাবেই সিংঘুতে কৃষক জমায়েতের মূল কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে এলোপাথাড়ি ইটপাটকেল ছোঁড়া ও কৃষকদের তাঁবু ভাঙচুর শুরু করলে কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে তাদের। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এগিয়ে গেলে দু’পক্ষের সংঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন।
তবে হামলাকারীদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। কিভাবে তার কৃষক জময়ায়েত কেন্দ্রে ঢুকল তাও এখনও স্পষ্ট করতে পারেনি কৃষক বা পুলিশ কোনও পক্ষই।
এদিকে সিংঘুতে হামলার ঘটনার পর কৃষক জমায়েতের অপর দুই কেন্দ্র তিকরি এবং দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত এলাকার গাজিপুরে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে ‘মহাপঞ্চায়েত’

প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির লালকেল্লায় সংঘাতের পর থেকেই চাপে রয়েছেন কৃষক আন্দোলনের নেতারা। উত্তরপ্রদেশ-দিল্লির গাজিপুর সীমানা থেকে কৃষকদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল যোগী প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই প্রচুর পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয় সেখানে।
এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের একাংশ যখন রণে ভঙ্গ দিয়ে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই পরিস্থিতি বদলে দিল আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলোর মঞ্চ ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের (বিকেইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েতের একটি সাংবাদিক বৈঠক। বৈঠকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে আবেগতাড়িত এই কৃষক নেতা কেঁদে ফেলেন। মুহূর্তে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে যায়।সেখানে দেখা যায় ক্রন্দনরত অবস্থায় এই কৃষক নেতা আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কৃষকদের আবার আন্দোলনে ফিরে আসার আকুতি জানাচ্ছেন।
রাকেশ টিকায়েতের কান্নার এই চিত্র বদলে দেয় পরিস্থিতি। পুলিশকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা ফের জড়ো হতে থাকেন জমায়েত কেন্দ্রে; একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর দেখে রাতেই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আরও কৃষক এসে যোগ দেন গাজিপুরের কৃষক জমায়েত কেন্দ্রে।
শুক্রবার কৃষকদের ‘মহাপঞ্চায়েত’ বা সম্প্রসারিত একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকেই আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার
এসএমডব্লিউ