মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি বাইডেনের
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে একথা জানান তিনি।
নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র সরকারকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ আটক করা হয় অনেক শীর্ষ নেতাকে। এছাড়া একযোগে ২৪ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকেও অপসারণ করে অভ্যুত্থানকারীরা। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি)।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম এই প্রেসিডেন্ট বলেন, (সামরিক) শক্তি কখনও মানুষের ইচ্ছা বা মতামতকে অবদমিত করতে পারে না। এমনকি একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বসযোগ্য নির্বাচনের ফলাফলকেও পাল্টে দেওয়া যায় না।
দীর্ঘ সামরিক শাসনের কবল থেকে ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসায় গত দশকে মিয়ানমারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সোমবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনার পর এখন আবার জরুরি ভিত্তিতে সেই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, ‘আক্রমণ ও হুমকির মুখে পড়লে গণতন্ত্রের পক্ষে সবসময়ই দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র।’
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে এই ঘটনা ঘটল। আবার মিয়ানমারের এই ঘটন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি ও লক্ষ্যকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
রোববার দেওয়া বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও অং সান সু চি-সহ বেসামরিক নেতৃত্বকে বন্দী করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘আতঙ্কিত’।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার যেকোনো ধরনের চেষ্টার বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টারও বিরোধিতা করছে ওয়াশিংটন। এই পদক্ষেপগুলোর ব্যত্যয় ঘটলে মিয়ানমারের দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া জাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্যও মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলকে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর ভয়াবহ আক্রমণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। এছাড়া এই ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসারও প্রস্তুতি নিচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কমপক্ষে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে সবার মুক্তি দাবি করেছে সংস্থাটি।
সূত্র: বিবিসি
টিএম