মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের পর মান্দালয়েও বিক্ষোভ করেছেন একদল প্রতিবাদকারী। বৃহস্পতিবার মান্দালয়ের রাস্তায় প্রতিবাদকারীরা অভ্যুত্থানবিরোধী স্লোগান ও আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি করেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের দ্বিতীয় শহর মান্দালয়ে অভ্যুত্থানবিরোধী স্লোগান ও পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন একদল প্রতিবাদকারী। গত সোমবার দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটির রাস্তায় এটিই অভ্যুত্থানবিরোধী প্রথম বিক্ষোভ। এর আগে ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ি-ঘরের সামনে থালা-বাটি, হাড়ি-পাতিল বাজিয়ে অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় মান্দালয়ের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর ছবি ছড়িয়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মান্দালয় মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির বাইরে প্রায় ২০ জন প্রতিবাদকারী জমায়েত হয়েছেন। তাদের হাতে ‘সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ’ লেখা একটি ব্যানারও দেখা যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘আমাদের আটক নেতাদের, এখনই মুক্তি দাও, এখনই মুক্তি দাও’ স্লোগান দেন।
রাজপথে বিক্ষোভের রক্তাক্ত দমনে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অতীত ইতিহাস রয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত সোমবার দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয়। দেশটিতে তুমুল জনপ্রিয় ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন্ট মিন্ট এবং অন্যান্য নেতাদের আটক করে সামরিক বাহিনী।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যবহারের জন্য অবৈধভাবে আমদানি করা ছয়টি ওয়াকিটকি সু চির বাসভবন থেকে উদ্ধারের পর বুধবার মিয়ানমার পুলিশ দেশটির এই নেত্রীর বিরুদ্ধে আমদানি রপ্তানি আইন লঙ্ঘনের দায়ে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
ফেসবুক বন্ধ
অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বেসামরিক সরকার ক্ষমতাচ্যুত করায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জোরাল হচ্ছে। এমনকি দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতি সম্ভাব্য প্রতিরোধের আশঙ্কায় মিয়ানমারের নতুন সামরিক সরকার দেশটিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, আমদানি রপ্তানি আইনের লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যাপক জনপ্রিয় এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারও এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে ঘোষণা দিতো।
দেশটির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলেছেন, বুধবার শেষ রাতের দিক থেকে তারা ফেসবুকে ঢুকতে পারছিলেন না। মোবাইল সেবা প্রদানকারী টেলিনর মিয়ানমার এক বিবৃতিতে দেশটির নতুন সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে থেকে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
এসএস