আফ্রিকায় দুর্ভিক্ষের মুখে ১ কোটিরও বেশি মানুষ: জাতিসংঘ

পূর্ব আফ্রিকার উপদ্বীপ অঞ্চল হর্ন অব আফ্রিকায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সেখানে তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছেন অন্তত ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ।
টানা তিন বছর ধরে অনাবৃষ্টি ও তার ফলে সৃষ্ট খরায় কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।
ডব্লিউএফপির পূর্ব আফ্রিকা শাখার পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘তিন বছরের অনাবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, পানির অভাবে মারা যাচ্ছে গবাদি পশু। ১৯৮০ সালের পরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি হর্ন অব আফ্রিকায়।’
‘যদি দ্রুত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না যায়, সেক্ষেত্রে কেবল ক্ষুধার কারণে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি দেখতে হবে আমাদের।’
হর্ন অব আফ্রিকার বাসিন্দা মোহামেদ আদেম রয়টার্সকে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা আগে কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি। বৃষ্টির কোনো আভাস নেই, কেবল ধুলো ঝড় হয় এই অঞ্চলে। আমাদের ভয় হচ্ছে— দ্রুতই হয়ত এই পুরো এলাকা একটি সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হবে।’
জিবুতি, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া ও সোমালিল্যান্ড- এই ৫ দেশের ভূখণ্ডের কিছু কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হর্ন অব আফ্রিকা নামের এই ভৌগলিক অঞ্চলটি। ইথিওপিয়া সরকারের মুখপাত্র লেগেসে তুলু, ‘যদিও এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি, কিন্তু দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে এখানকার খরা পরিস্থিতি। ডব্লিউএফপি যে সতর্কবার্তা দিয়েছে, তাতে কোনো ভুল নেই।’
এই অঞ্চলের অপর দেশ সোমালিয়ায় অবশ্য ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তীব্র খরা দেখা দিয়েছিল। সেসময় দেশটিতে না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছিলেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। তাদের অর্ধেকই ছিল শিশু।
বর্তমানেও সেই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন ইউনিসেফ পূর্ব আফ্রিকা শাখার পরিচালক মোহামেদ ফাল। রয়টার্সকে তিনি জানান, বর্তমান খরা পরিস্থিতিতে খাদ্যাভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে হর্ন অব আফ্রিকার অন্তত ৫৫ লাখ শিশু।
‘যদি আমরা সত্যিই বিপর্যয়কে ঠেকাতে চাই, তাহলে এখন থেকেই আমাদের কাজ শুরু করা উচিত,’— নাইরোবি থেকে রয়টার্সকে বলেন মোহামেদ ফাল।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ