বয়স্কদের জন্য সিনোভ্যাকের টিকার অনুমোদন ইন্দোনেশিয়ায়

জরুরি প্রয়োজনে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের করোনা টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। শনিবার এক চিঠিতে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ সংস্থার (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এজেন্সি) পক্ষ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিনোভ্যাকের ইন্দোনেশীয় অংশীদার এবং দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বায়ো ফার্মাকে দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘এই টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রদত্ত তথ্যসমূহ আমলে নিয়ে খাদ্য ও ওষুধ সংস্থার পক্ষ থেকে এর অনুমোদন দেওয়া হলো।’
খাদ্য ও ওষুধ সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দেশটিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত পেশাজীবীদের টিকার আওতায় আনার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে আসছিল সরকার। তবে সম্প্রতি বয়স্ক মানুষদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ও মৃতুহার বেড়ে যাওয়ায় এই নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার গণটিকাদান প্রকল্পের মুখপাত্র ওইকু আদিসাসমিতো চিঠি প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বায়ো ফার্মাও জানিয়েছে, তারা চিঠিটি পেয়েছে।
গত মাসে সিনোভ্যাকের ৩০ লাখ করোনা টিকার ডোজ দিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করে ইন্দোনেশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে যেখানে প্রথম সারিতে রাখা হয়েছিল বয়স্ক মানুষদের, সেখানে ইন্দোনেশিয়ায় টিকা দেওয়ার তালিকায় শীর্ষে রাখা হয় দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
তবে সরকারের এই নীতির সমালোচনা করেন দেশটির স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ জনগণ। ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়ার মহামারিবিদ পান্দু রিওনো বলেন, ‘আমরা যদি হাসপাতালগুলোতে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা হ্রাস করতে চাই, সেক্ষেত্রে ব্যাপকহারে দেশের বয়স্ক নাগরিকদের টিকার আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।’
মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে আট লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে গতিতে টিকাদান চলছে তা অব্যাহত রাখলে মার্চের শেষ নাগাদ আড়াই লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, চলতি বছরে ২৭ কোটি মানুষের দেশ ইন্দোনেশিয়ার দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ১৮ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
এসএমডব্লিউ