আমরা শান্তি চাই, কিন্তু রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড ছাড়বো না : ইউক্রেন

রাশিয়া পূর্ব ইউরোপের শান্তি প্রচেষ্টা বিনষ্ট করছে বলে অভিযোগে করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একইসঙ্গে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে নিজের ভূখণ্ডের দাবি ছেড়ে দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে সোমবার ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
রয়টার্স বলছে, সোমবার রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সভাপতিত্বে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেন জেলেনস্কি।

একইসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও এ সংক্রান্ত সংকট নিরসনে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছে মস্কো। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধনের পক্ষে। আমরা কেবল এটিই অনুসরণ করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের ভূখণ্ডেই রয়েছি। আমরা কাউকেই (রাশিয়া) ভয় পাই না। আমরা কারও কাছে বশ্যতা স্বীকার করব না এবং কারও কাছে কিছু ছেড়েও দেবো না।’
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

এই পরিস্থিতিতে সোমবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। তবে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে বিশাল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে রাখলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করায় হতাশা প্রকাশ করেছে জেলেনস্কি প্রশাসন।
বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে মিত্র দেশগুলোর কাছে সহায়তাও চেয়েছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ভাষায়, ‘ইউক্রেনের সমর্থনে মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করি। এটি দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, কারা আমাদের সত্যিকারের বন্ধু আর কারা কেবল কথা দিয়েই রাশিয়াকে ভয় দেখাতে চায়।’
টিএম