৪ পায়ের সাপ নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন তথ্য

পৃথিবীতে ডাইনোসর যখন ছিল, তখন অনায়াসে বিরাজ করত আরেক ভয়ানক সরীসৃপ। বিজ্ঞানীদের মতে, সেই সময়ে চার পায়ের সাপ পৃথিবীতে বাস করত। কিন্তু এখন এর পেন্সিল আকৃতির জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণার পর দেখা গেছে এটি ছিল অনেকটাই ভিন্ন। এই পেন্সিল-আকারের জীবাশ্মটি মাত্র ৭.৭ ইঞ্চি। যা আগে চার পায়ের সাপ বলে ধারণা করা হতো। চার পায়ের সাপ হিসেবে যাকে বিজ্ঞানীরা ভাবছিলেন, এটি আসলে ডলিকোসর নামে একটি বিলুপ্ত সামুদ্রিক টিকটিকি ছিল। এটি একটি খুব দীর্ঘদেহের টিকটিকি ছিল, যা ক্রিটেসিয়াস যুগে পাওয়া গিয়েছিল। অর্থাৎ ১৪.৫০ মিলিয়ন বছর থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছরের মধ্যে। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিজ্ঞানীরা যখন পেন্সিল-আকৃতির এই জীবাশ্মটি অধ্যয়ন করছিলেন, যার বৈজ্ঞানিক নাম টেট্রাপোডোফিস অ্যামপ্লেক্টাস। গ্রীক ভাষায় এর অর্থ চার পায়ের সাপ। কানাডার আন্দামন্টনের আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল ক্যাল্ডওয়েল বলেন, আমাদের দল যখন এটি নিয়ে গবেষণা করে, তখন দেখা যায় এটি সাপ নয়। এর জীবাশ্মে সাপের মৌলিক অভ্যন্তরীণ কাঠামো ছিল না।
আগের বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন সাপের পূর্বপুরুষদের চারটি পা ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে সেল জার্নালে প্রকাশিত দুটি গবেষণা। বলা হয়, প্রায় ১৫০ মিলিয়ন বছর আগে সাপের চারটি পা শেষ হয়ে গেছে। এর কারণ ছিল জেনেটিক মিউটেশন। একই সময়ে ২০১৫ সালে Tetrapodophis amplectus আবিষ্কৃত হয়েছিল। এরপর সায়েন্স জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তখন বলা হয়, এই জীবাশ্ম ১২০ মিলিয়ন বছরের পুরনো। এর চারটি পা ছিল, প্রতিটি পায়ের পাঁচটি আঙ্গুল ছিল। এগুলো হাঁটার জন্য ব্যবহৃত হতো না, তবে সঙ্গমের সময় তাদের সঙ্গীকে ধরে রাখতে এবং শিকার ধরতে বা শত্রুর সাথে মারামারি করতে ব্যবহৃত হতো।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে Tetrapodophis amplectus ছিল এক ধরনের সামুদ্রিক টিকটিকি। এই গবেষণাটি সম্প্রতি জার্নাল অব সিস্টেমেটিক প্যালিওন্টোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। তার মাথার খুলির যে অংশগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো খারাপভাবে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। আগে কেউ এর মাথার খুলি অধ্যয়ন করার চেষ্টা করেনি। তবে এখন এটি নিয়ে গবেষণা করা হলে জানা যায়, এটি সাপ নয়, আদতে একটি টিকটিকি।
এসএসএইচ