ট্রাইব্যুনালে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করা ফয়জুল্লাহ গ্রেপ্তার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ এফ এম ফয়জুল্লাহকে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে শাহবাগ থানার ওসি মামুনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আমরা তাকে হেফাজতে নিয়েছিলাম পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আমরা তাকে গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার কাছে হস্তান্তর করেছি। তার বিরুদ্ধে ওই থানায় যুদ্ধাপরাধ মামলা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার আগে এ এফ এম ফয়জুল্লাহ নামের এই ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের গেটে এসে নিজেকে এ মামলার প্রধান আসামি দাবি করে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে চান। তখন তাকে ট্রাইব্যুনালের গেটের বাইরে নিরাপত্তা কর্মীদের কক্ষে রেখে রায়ের পর পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ব্যক্তির বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ট্রাইব্যুনালের গেটের বাইরে নিরাপত্তা কর্মীদের কক্ষে বসে থাকা ব্যক্তি নিজেকে মামলার পলাতক আসামি এ এফ এম ফয়জুল্লাহ বলে দাবি করছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও ভালুকার আট ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ে প্রথমবারের মত খালাস পেয়েছেন এক আসামি। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম, বিচারপতি আমির হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদারের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, পাঁচ আসামিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- এ এফ এম ফয়জুল্লাহ, শামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম ও আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল। আর ২০ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- খলিলুর রহমান মীর, আব্দুল্লাহ, রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, সিরাজুল ইসলাম তোতা, আলিম উদ্দিন খান। খালাস পেয়েছেন আব্দুল লতিফ। প্রায় ১১ বছর ধরে চলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কোনো রায়ে তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি খালাস পেলেন।
২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর এই মামলার তদন্ত শুরু হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ওই বছরের ২৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের অপরাধের অভিযোগ এনে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ ও উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত বছরের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষায় রাখা হয়। তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়।
এই মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১১ জন। পরে বিচার চলা অবস্থায় কারাগারে থাকা আসামি আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার মারা যান। আর পলাতক অবস্থায় মারা যান আসামি নুরুল আমিন শাজাহান। বাকি আট আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন খলিলুর রহমান মীর, শামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, আব্দুল্লাহ, রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী ও আব্দুল লতিফ।
এমএইচডি/এসএসএইচ