রাজনৈতিক বৃত্ত থেকে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন মুক্ত করতে হবে

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলের সমর্থনে সাদা ও নীল প্যানেলের ব্যানারে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবিধান সংরক্ষণ কমিটি নামে একটি সংগঠন।
বৃহস্পতিবার ল’ রিপোর্টার্স ফোরামে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি করেন। তারা রাজনৈতিক বৃত্ত থেকে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ২০২১ সালে নির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর বারের এক বছর কার্যক্রম হয়েছে সভাপতিবিহীন। সভাপতি নির্বাচনের জন্য একবার উদ্যোগ নিলেও তা ব্যর্থ হয়। বারের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০ লঙ্ঘন করে কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল যা বেআইনি, বিশেষ করে কোনো বাজেট প্রণয়ন না করেই বারের তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বারবার তৎকালীন কার্যনির্বাহী কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা, লিফলেট বিতরণ অর্থাৎ গণতান্ত্রিক সমস্ত রীতিনীতি অনুযায়ী সংবিধানের পথে আনার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু তারা গায়ের জোরে এক বছর কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তার শেষ পরিণতি হচ্ছে সংবিধান লঙ্ঘন করে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা। ভোটগ্রহন যদিও হয়েছিল কিন্তু ভোট গণনা হয়নি।
বারের সাবেক সভাপতিদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বারের সাবেক সভাপতিদের একটি বড় অংশের আচার আচরণ এমন, যেহেতু তারা সভাপতি নির্বাচিত হয়ে গেছে, এখন তারা বৈরাগ্য বেশ ধারণ করেছে। অথচ তাদের মধ্যে কয়েকজন আছেন যারা নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বারের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আর সাবেক সম্পাদকরা সভাপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু এ সমস্ত সুবিধাবাদীদের বাইরেও অনেক সাবেক নির্বাচিত নেতা, সিনিয়র সদস্য ও নবীন আইনজীবীরা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। বর্তমানে বারে যে চরম নৈরাজ্য দেখছি, তা হচ্ছে রোগের লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি রাজনৈতিক নেতাদের যদি বোঝাতে সক্ষম হই যে, আইনের শাসন, গণতন্ত্র এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য স্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট বারের কোনো বিকল্প নেই, তাহলে তারা সহযোগিতা করবেন। আর এ পারস্পরিক আলোচনা এবং রাজনৈতিক প্যানেলের বৃত্ত থেকে বারের নির্বাচনকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক প্যানেলের বৃত্ত থেকে বারের নির্বাচনকে মুক্ত করে, সংবিধান এবং নির্বাচন রুলস ২০০১ অনুযায়ী ভবিষ্যতে যেন বারের নির্বাচন পরিচালিত হয়, সেই প্রচেষ্টা শুরু করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১৮ জুনে গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, আইনবিদ, শিক্ষক ও সাংবাদিকরা থাকবেন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, সদস্য ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম আশরাফ উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচডি/আরএইচ