কাজী এবাদুল হক নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বিরল নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তার সততা, শ্রম কিংবদন্তির মতো। আমরা তাকে উদাহরণ হিসেবে নিতে পারি।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কাজী এবাদুল হকের জানাজার পূর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, কাজী এবাদুল হক বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। প্রত্যেকটি বই আমাকে উপহার দিয়েছেন। আমি প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর শুভেচ্ছা জানাতে স্ত্রী, মেয়েসহ বাসায় এসেছিলেন। আমি নানান ভাবে কাজী এবাদুল হকের কাছে কৃতজ্ঞ। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তার কবর যেন জান্নাতের বাগিচা বানায়ে দেন।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য শেষে ২টা ৪০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক কাজী এবাদুল হকের জানাজা সম্পন্ন হয়।
সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের পেশ ইমাম আবু সালেহ মো. সলিমউল্লাহ জানাজায় ইমামতি করেন।

জানাজায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খানসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী জানাজায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন : একুশে পদকপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক মারা গেছেন
জানাজা শেষে কাজী এবাদুল হকের মরদেহে প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় বিচারপতি এবাদুল হকের মেয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ বাদ আসর রাজধানীর নিকুঞ্জে আরেকটি জানাজা শেষে নিকুঞ্জ কবরস্থানে মরহুম এবাদুল হককে দাফন করা হবে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে মারা যান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক কাজী এবাদুল হক।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। তার স্ত্রী অধ্যাপক শরীফা খাতুনও ২০১৭ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। তার মেয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি।
১৯৩৬ সালে ফেনীতে জন্ম নেওয়া বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ১৯৫২ সালে ফেনীতে ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪-৫৫ সালে তিনি ফেনী ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। অধ্যাপক শরিফা খাতুনও ভাষা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে প্রচারণা চালান। স্কুলের ছাত্রীদের সংগঠিত করেন।
এমএইচডি/আইএসএইচ